পাট বাংলাদেশের সোনালি আঁশ। এক সময়ের অর্থকারী ফসল ছিল। পাট চাষ করে কৃষকের সংসারে আসত সচ্ছলতা। কিন্তু পরিবেশ আবহাওয়ার ও সময় পাল্টেছে। এ বছর পাট চাষ করে ক্ষতির আশঙ্কায় কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কৃষকরা। পাট চাষিদের সাথে কথা বলে এমন তখ্য জানা যায়, পাট চাষের জন্য এবছর আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকূলে ছিল না। তাছাড়া চলতি মৌসম কেটেছে শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি, সার, কিটনাশকের দাম বৃদ্ধি এবং এসব সময় মতো না পাওয়ার আশঙ্কায়। আর এখন শঙ্কা বিক্রিতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়া নিয়ে।
সরেজমিনে কথা হয় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধপপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর গ্রামের পাটচাষি মো. হানিফ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, পাট চাষে অনেক শ্রম দিতে হয়। উৎপাদন খরচও বেশি। বিক্রি করতে গেলে পাওয়া যায় না ন্যায্য দাম। তবুও এবছর ২১ শতক জমিতে পাট চাষ কেরেছি। বীজ বপন থেকে শুরু করে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে শুকানো পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়।
আর এবছর বর্ষায় জমিতে পানি উঠার কারণে পাট গাছের নিচের অংশ পঁচে যায়। যার কারণে প্রায় ১ মাস আগে পাটগাছ কেটে ফেলতে হয়েছে। ফসল ভাল হবে না। আমার ২১ শতক জমিতে ৩ মন পাট পেতে পারি। এখন বাজারে পাট ২২০০ টাকা মন। দাম বৃদ্ধি না হলে লোকশান গুনতে হবে।
অপর আরেক পাটচাষি ৭০ বছর বয়সী আবদুল মালেক বলেন, আগের চেয়ে পাট চাষের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। এবছর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ১ম বার বীজ নষ্ট হওয়ায় ২য় বার বীজবপন করতে হয়েছে। যার কারণে খরচ বেশি হয়েছে। ঐ তুলনায় বাজারে পাটের দাম অনেক কম। এ বছর ১০ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছি। দাম ভালো পেলে আগামী বছর আরও বেশি পাটের আবাদ করব। আর লোকসান হলে বিকল্প ফসল চাষ করব।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, এবছর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক কৃষক ২ বার পাটের বীজবপন করতে হয়েছে এবং পানিতে পাট গাছের নিচের অংশ পঁচে যাওয়ায় আগাম কর্তন করতে হয়েছে। বর্তমান দামে পাট বিক্রি করলে কৃষকের কম লাভ হবে কিন্তু লোকসান হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন