মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

প্রত্যাশার নামে চড়া সুদে ক্ষুদ্র ঋণের রমরমা বাণিজ্য

| প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : সরকারি নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সমাজসেবার নামে চলছে চড়া সুদে ক্ষুদ্র ঋণের রমরমা বাণিজ্য। স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা ও ঋণের বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সমাজসেবা অধিদপ্তর, সমবায় ও যুব উন্নয়ন থেকে সেবামূলক কাজ করার অনুমতি (নিবন্ধন) নিয়ে সংস্থাগুলো তাদের এই অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরেই ধারাবাহিকতায় প্রত্যাশার আলো নামক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির খান (৪৫) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ঐ সমবায় সমিতির সভাপতি শাহজাদ আলী। জানা যায়, শাহাজাদ আলী ও মনির খানসহ আরোও ৬ জন সদস্য নিয়ে গত ২০১১ সালে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে সমাজের সেবামূলক কাজ করার অনুমতি (নিবন্ধন) নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম চালু করেন। যার রেজি নং ১১৫। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের পর সাধারণ সম্পাদক সরকারের নিয়মনীতির কোনোরূপ তোয়াক্কা না করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম চালু করে সকল ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টের সহিযুক্ত ফাঁকা চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। ঋণ গ্রাহীতাদের ঋণের বিপরীতে প্রতি কিস্তির সাথে সঞ্চয়ও জমা নেন। পরবর্তীতে সমিতির সভাপতি দায়িত্বরত সাধারণ সম্পাদক মনির খানের কাছ থেকে সঠিক আয়-ব্যয় ও সঞ্চয় এর হিসাব জানতে চাইলে সে হিসাব দিতে গড়িমশি শুরু করেন। এ অবস্থায় আয়-ব্যয়ের হিসাবের সাথে সাথে সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ দেওয়ার অভিযোগও উঠে আসে। যে কারণে সমিতির সভাপতি সরকারি নিয়মনীতি মেনে চলতে সাধারণ সম্পাদককে বারবার তাগিদ দেন। কিন্তু তিনি কোন কর্ণপাত না করে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়িয়ে দিয়ে দেদারছে তার সেই দাদন ব্যবসার ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত করতে থাকেন। যার ফলে সমিতির সভাপতি শাহজাদ আলী গত বছর ১৫ আগস্ট উপজেলা সমবায় অফিসার মো. আব্দুর রউফ বরাবর সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে প্রত্যাশার আলো সমবায় সমিতির অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের মধ্যে ইতোপূর্বে বিভিন্ন আকারে ঋণ প্রদান করা হলে ঋণ গ্রহীতারা নিয়মিতভাবে নিয়ম মাফিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে থাকেন। কিন্তু সমিতির সভাপতিসহ ১০ জন সদস্যের উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ এর কারণে সাধারণ সম্পাদক মনির খান ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযোগকারীগণের রক্ষিত ফাঁকা চেককে পুঁজি করে তাদের বিরুদ্ধে দিনাজপুর ম্যাজিস্ট্রেট কোটে চেক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় অফিসার মো. আব্দুর রউফকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, প্রত্যাশার আলো সমিতি নিবন্ধন করার সময় শাহাজাদ আলী সভাপতি ও মনির খান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছিলেন। এক বছর মেয়াদকাল শেষ হলে প্রত্যাশার আলোর মাসিক সভায় রেজুলেশন করে শাহাজদ আলীকে বাদ দিয়ে অন্যকে সভাপতি করা হয়েছে মর্মে আমাকে অবগত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক। সমবায় নিবন্ধন নিয়ে সমিতির বাহিরে কোন সদস্যকে ঋণ দেওয়া যায় কিনা এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সমবায়ের নামে কোন প্রকার ঋণ কার্যক্রম পরিচলানা করা যায় না। সমিতির সঞ্চয়ী সদস্যদের মধ্যে ঋণ কার্যক্রম করতে হলে সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া ঋণ প্রদান আইনত অবৈধ্য। তিনি আরও জানান, আমার কাছে প্রত্যাশার আলো, পল্লীসেবা, জনসেবাসহ আরো ৪টি সমবায় সমিতিরি বিরুদ্ধে অবৈধ্য পন্থায় ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনার অভিযোগ আছে এবং এই সমিতিগুলোর নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে মনির খান জানান, তিনি কাউকে প্রত্যাশার আলো সমবায় সমিতি থেকে ঋণ দেননি। সমিতির ওই ১০ জন তার কাছে টাকা ধার নিয়ে ফেরত না দেয়ায় তিনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন