পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে সাথেই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নেই শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা। তফসিল ঘোষণার আগেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের প্রাক প্রস্তুতি শুরু করে। সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টার বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, হাট বাজার ও চা-এর দোকানে আসন্ন ইউনয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অন্যদিকে এই উপজেলা যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা, সেই সাথে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীরও সংসদে এই এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছেন, পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তনয় জয়ের আগামী দিনের সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকা হিসেবেও পীরগঞ্জকে গণ্য করা হচ্ছে। সে কারণে অনেকেই অন্যদল থেকে নানা কৌশলে ক্ষতাসীন দল আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকায় চড়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার অপচেষ্টা করছে। যদিও আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা কর্মীরা এসব সুবিধাবাদী নেতাদের কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। উপজেলার ১২নং মিঠিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওই ইউনিয়ন শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা সবদিক থেকে অন্যতম হিসেবে গুরুত্ব দেয়া হয়। ক্ষমাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৃণমূলে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সম্পাদক এসএম ফারুক আহমেদ। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ফারুক আহমেদের পিতা আবু হোসেন সরকার পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। অবশ্য তিনি ওই ইউনিয়ন পরিষদের একবার চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাংগাঠনিকভাবে দক্ষ তরুণ সমাজকর্মী ফারুক আহমেদ এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় আলোচিত। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আলী সরকার রাজাও একজন শক্তিশালী প্রার্থী। তবে তিনি দলীয় ব্যানারে নাকি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মুসা আলী ম-ল। তিনিও তার নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ জোরেশোরেই। অবশ্য কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী সোহেলের আস্থাভাজন স্পেন প্রবাসী মোরশেদ আলী সরকার এতদিন পর্যন্ত দলের মনোনয়ন প্রাপ্তির চেষ্টা চালালেও বর্তমানে তিনি ভোল পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগের দিকে ঝুঁকছেন। স্থানীয় কিছু সুবিধাবাদী লোক মোরশেদকে নৌকা মার্কার প্রার্থী করার জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। উল্লেখ্য, জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাবেক নেতা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা মোরশেদ আলী সরকার ১৯৯৬ইং সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কর্নেল ফারুক রশীদের ফ্রিডম পার্টি পীরগঞ্জ থানা শাখার সভাপতি পরিচয়ে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন। যা তিনি সে সময় বেশ গর্বভরে আলোচনাও করতেন। আরও দু’একজন প্রার্থী প্রচারণা চালালেও শেষ পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন অনেক। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কে কোন দলের মনোনয়ন পাবেন? তার উপরই নির্ভর করছে প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের বিষয়টি অনেকটাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন