এ বছরের এপ্রিল মাসে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে গিয়েছে পাকিস্তানে। বিদেশী ষড়যন্ত্র ও দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতকদের কারণে আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার হারিয়েছেন ইমরান খান। পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি তিনি। বস্তুত, পাকিস্তানে সংসদীয় ইতিহাসে ইমরানই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি আস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিলেন। কিন্তু দেশের বিপদের সময়ে চুপ বসে থাকতে পারলেন না ‘ক্যাপ্টেন’। তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ পাওয়া গেল আরও একবার!
গত সোমবার রাতে টিভিতে একটি অনুষ্ঠান করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিন ঘণ্টার সেই অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের নাগরিকদের বন্যাত্রাণে আর্থিক সাহায্য করার আবেদন করেন তিনি। ফলও মেলে হাতেনাতেই। তার তহবিলে ৫০০ কোটি রুপিরও বেশি জমা পড়ে। এ জন্য দেশের নাগরিক, বিশেষ করে প্রবাসীদের আর্থিক সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইমরান। এর পরেই বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) কে তুলাধুনা করেছেন তিনি।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বর্তমানে অবৈধ তহবিল পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন দ্বারা তদন্তাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ইমরান খান বলেন, তার তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠান দেখে নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) প্রধান জানতে পেরেছেন বিদেশী তহবিল কী। ‘সিইসি সিকান্দার সুলতান রাজা, (আমি আশা করি) আপনি এখন বুঝতে পেরেছেন যে বিদেশী তহবিল কাকে বলে,’ ইমরান খান সারগোধার স্পোর্টস স্টেডিয়ামে একটি জনসমাবেশে বলেছিলেন। তিনি ইসিপি প্রধানকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি অনুষ্ঠানের সময় ‘বিদেশী অর্থায়ন দেখেছেন’ কিনা এবং যোগ করেছেন যে, বেশিরভাগ অর্থ বিদেশী পাকিস্তানিরাই দিয়েছে, যেমনটি তার দলের জন্যও তারা দিয়েছিলেন।
ইমরান খান বলেন, তার দল ১০০০ কোটি রুপি সংগ্রহ করত তবে সময়ের অভাব ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি এমন একজন ক্যাপ্টেন যাকে দেয়ালে ধাক্কা দিলে আরও কঠিন লড়াই হবে... যদি তারা আমাকে এক কোণে ঠেলে দিতে থাকে, তাহলে আমি তাদের কথা ফাঁস করতে পারি যারা দেশকে বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।’ ‘দেশের স্বার্থে চার মাস ধৈর্য্য ধরেছি। জাতি আমার সাথে আছে...(এবং) আমি সবসময় ইসলামাবাদকে (এক ডাকে) বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে আমি তা করছি না,’ ইমরান খান বজ্রকণ্ঠে বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, তাকে রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কারণ তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা ভয় পেয়েছিলেন, বিশেষত পাঞ্জাবের উপনির্বাচনে পরিষ্কার জয়ের পরে, যদি নির্বাচন হয় তবে পিটিআই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় ছিল স্বচ্ছ সাধারণ নির্বাচন। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন