নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের মোতলেব মিয়া (৬৭)। বাবার নাম মরহুম মনছুর আলী। এক সময় দিনমজুরের কাজ করতেন। বয়সের কারণে বেকার হলেও কবিরাজি করেন। তবে কবিরাজের প্রতি এখন আর মানুষের আগের মত বিশ্বাস নেই। এলাকায় তিনি একজন গোরখাদক নামে পরিচিত। এলাকায় কোন মানুষ ইন্তেকাল করলেই তার ডাক পড়ে।
তিনি বলেন, ৭ বছর বয়স থেকে শুরু করেছি। এখনও কবর খুঁড়ে যাচ্ছি। ছোট বেলায় মেজবানিতে (কুলখানি) দাওয়াত পাওয়ার জন্যই কবর খুঁড়তাম। ছোট বেলা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষের কবর খুঁড়েছি। আমার কাজে ওস্তাদ ছিলেন নগরপাড়ার আজিজ মিয়া ও নুরা ভাই। এখন আর আগের মত পারি না। তারপরও নেশা হয়ে গেছে। কারো মৃত্যু সংবাদ শুনলে বসে থাকতে পারি না।
ছেলে সন্তান না থাকায় সাংসারিক খরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, বয়স ৬৭ পার হলেও এ পর্যন্ত পাননি কোনো বয়স্ক ভাতা বা কোনো প্রকার সরকারি সাহায্য। নির্বাচন এলে মেম্বার চেয়ারম্যানরা বলেন এইবার তোরে বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা দেব। নির্বাচন চলে গেলে আর কেউ খবর নেন না দেড় শতাধিক গোরখোদক মোতলেব মিয়ার।
একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক মোতলেব মিয়া বলেন, একটা কবর খুঁড়তে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, সেগুলোর সব আমার রয়েছে। আমি কবিরাজি করেই মূলত সংসার চালাই। তাই কোনো অঞ্চলে কাজ করতে যাওয়ার আগে বলি রাখি, যদি আমার প্রতিবেশী কেউ মারা যান, খবর পাওয়া মাত্রই আমি কাজ ছেড়ে চলে আসি তার কবর খোঁড়ার জন্য। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কবর খুঁড়ে যেতে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল হক বলেন, বয়স হওয়ার পরও মোতালেব কেন ভাতা পাচ্ছেন না, তা আমার জানা নেই। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা না পেয়ে থাকলে আমার কাছে আসলে আমি ব্যবস্থা করে দেব। অথবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলে দেব তাকে সুবিধা প্রদান করতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন