দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ঘুরতে আসে নদী বেষ্টিত পর্যটন এলাকা চরফ্যাশনে। প্রতি বছরই ঈদ ও পূজাসহ অবসরে সময় কাটানোর জন্য হাজারো পর্যটকে মুখর হয়ে ওঠে চরফ্যাশন উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলো। আর এ পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত রয়েছে চরফ্যাশনের নতুন দর্শনীয় স্থান পানি উন্নয়ন বোর্ডের রঙিন বেড়িবাঁধ উদ্যান।
চরফ্যাশন উপজেলা সদর থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনিয়ন নজরুল নগর চরকলমী ও বকসি বাবুরহাট এলাকার সারেক খালি গ্রাম সংলগ্ন বেড়িবাঁধে এ পর্যটনের নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে ভোলা পানি উন্নয়নবোর্ড-২। খামার বাড়ি সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত মনোমুগ্ধকর এই উদ্যান। তেঁতুলিয়ার ভাঙন থেকে স্থানীয় হাজার হাজার বাসিন্দাকে রক্ষা করতে কঙ্কিটের তৈরি সারি সারি ব্লকের বাঁধকে নানান রঙে রাঙিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দর্শনীয় স্থানটি। যেখানে এসে মুগ্ধ হচ্ছে পর্যটকরা। ছুটির দিনসহ বিভিন্ন উৎসবে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠছে এই উদ্যান। প্রতিদিন বিকালে এখানে মানুষের ঢল নামে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যে ঘেরা এই বেড়িবাঁধের উদ্যানে বসে সময় কাটায় কিশোর তরুনসহ সব বয়সের মানুষ। পড়ন্ত বিকেলের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।
মৎস্য শিকারী জেলেরা তেঁতুলিয়ার বুকে প্রকৃতির ধারন করা এ ছবির ঢেউকে ভেঙে দিয়ে যায় ক্ষাণিক সময়ে। যা কিনা মনের উৎফল্লের খোরাকে মিষ্টি অনুভূতির সৃষ্টি করে। পরক্ষণেই অস্তমিত সূর্য নদীর ঘোলা জলে হারিয়ে গেলে উত্থান ঘটে রাঙা সাঝের আকাশের। তখন পর্যটকদের কাছে প্রকৃতির বিশেষ এ দৃশ্য অনেক আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। নদীর ঢেউ আর নির্মল বাতাসে বসে আড্ডা, সেলফি তোলা, গান গাওয়া আর পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসার নিরাপদ স্থান এখানে।
ঘুরতে আসা নজরুল হক অনু জানান, তেতুলিয়া পাড়ে ভাঙন কবলিত ব্লকে নানান রকম রঙে সজ্জিত দর্শনীয় এই স্পটের নাম শুনেছি, কিন্তু কখনও আসা হয়নি। এই এলাকায় স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে এসে আমরা মুগ্ধ। বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে দূরের আকাশ, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর কাজল, চর মন্তাজ, চর বিশ্বাস, চর কুকরি-মুকরি এলাকার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, তেতুলিয়া নদীর জোয়ার-ভাটা আর প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। সব মিলিয়ে ভালো লাগার জায়গাটি বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড, ডিভিশন-২ বেড়িবাঁধের কোল ঘেষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র। তেতুলিয়া পাড়ের এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছে। তার পাশেই স্থানীয় এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলামের জেনিল ডেইরি ফার্ম ও জেনিক এগ্রো ফিসারিজ খামার বাড়ি।
স্থানীয়রা জানায়, শুধু উৎসব আর ছুটির দিন নয়, প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে তেতুলিয়া পাড়ে ছুটে আসে ভ্রমন পিপাসুরা। উৎসব পার্বণে দিনগুলোতে পর্যটকদের ঢল নামে। রং বে-রঙের ব্লক এলাকা জুড়ে কর্তৃপক্ষ লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা করেছে। ইতোমধ্যেই ভ্রমণ পিপাসুদের নদীর জলরাশি আর মনরম দৃশ্য মন কেরেছে।
পানি উন্নয়নবোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, আঞ্জুরহাট বাজার ন্যাংলাপাতা গ্রাম সংলগ্ন তেতঁলিয়া নদীর পাড় থেকে বকশী লঞ্চঘাঠ এলাকা ও বাবুরহাট লঞ্চঘাট পর্যন্ত নদী তীর রক্ষায় ৩২০০ কিঃমিঃ এবং বাঁধের ঢাল রক্ষায় সিসি ব্লক দ্বারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সম্পন্ন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন