শিক্ষা আলো ছড়ানোর বদলে দুর্নীতি অনিয়মের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছে সিলেটের চারটি কলেজসহ দেশের অর্ধশত সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় ৩২ কোটি টাকার নানা অনিয়মের দায় এখন এ প্রতিষ্টানগুলোতে। সরকারের শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা পরিদর্শন প্রতিবেদনে চিহ্নিত হয় এসব অনিয়ম। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসব অনিয়ম হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এক প্রতিবেদনে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সরকারি কলেজ ৪৩টি এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭টি।
অভিযুক্ত কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেট এমসি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ এবং হবিগঞ্জের বৃন্দাবন সরকারি কলেজ। অভিযুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সিলেটের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এদিকে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে জবাব চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, অডিট আপত্তি উঠলে নিয়মানুযায়ী তা নিষ্পত্তির জন্য জবাব চাওয়া হয়। এ নিয়ম মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে চাওয়া হয়েছে জবাব।
সরকারের শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা পরিদর্শন প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ৫৪টি খাতে ৩১ কোটি ৯১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৪ টাকার অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে টেন্ডার রেস্পনসিভ না হওয়া সত্ত্বেও ‘কোটেশনের’ মাধ্যমে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা, যা মূলত অনিয়ম।
শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়া সম্মানী ও বিভিন্ন বিল থেকে আয়কর কেটে রাখা হয়নি। এ খাতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা। বিল থেকে মূল্য সংযোজন করও কেটে রাখা হয়নি; যেখানে অনিয়ম হয়েছে ৩৭ লাখ টাকার বেশি।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি, ভর্তি ফি সহ বিভিন্ন ধরনের ফি আদায় করলেও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি কোষাগারে ৩৮ লাখ টাকা জমা করেনি। ঢাকার বাইরে সংযুক্ত শিক্ষকদের অনেকে বিধিবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত হারে বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন, যার জন্য প্রাপ্য ছিলেন না তারা। এক্ষেত্রে সরকারের ক্ষতি হয়েছে ৯২ লাখ টাকারও বেশি। শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকে অগ্রিম বাবদ টাকা নিলেও সমন্বয় করা হয়নি তা, যেখানে অনিয়ম হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। প্রতিবেদন অনুসারে, ছাত্রীদের উপবৃত্তির অবিলিকৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করার কথা। কিন্তু তা না করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় পৌনে ৪৭ লাখ টাকা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত প্রায় ৯১ লাখ টাকা এক খাত থেকে আরেক খাতে করা হয়েছে স্থানান্তর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন