গত ১৮ ও ১৯ আগস্ট ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতে ভেসে যাওয়া পাথরঘাটা, বরগুনা, পিরোজপুর ও ভোলার ৯০ জেলে এখনো ফিরে আসতে পারেনি দেশে।
এদের মধ্যে ভারতের কাকদীপে ৪৬, রায়দীঘি ১১ মৈপিট ১৭ ও কেনিং আশ্রয় কেন্দ্র ১৬ জেলেসহ ৯০ জেলে ভারতে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
এছাড়া এখনো পাথরঘাটার ছগির আলমের মালিকানাধীন এফবি সিরাজুল হক ট্রলারের ৬ জেলে ও বরগুনার নলির মো. জাহাঙ্গীর মোল্লার মালিকানাধিন এফবি ভাই ভাই ট্রলারের ২ জেলে এবং বরগুনার নিশান বাড়িয়ার মো. ছত্তার মাস্টারের মালিকানাধীন এফবি মাহদি ট্রলারের ১ জনসহ ৯ জেলের খোঁজ মিলেনি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ভারতের কাকদীপ আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় গ্রহন করা মহিপুরের ইউনুছ গাজী।
জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট পাথরঘাটার বিএফডিসি থেকে ছগির আলমের এফবি সিরাজুল হক ট্রলার নিয়ে ১১ জেলে ইলিশ শিকারে যান গভীর সমুদ্রে। ১৮ আগস্ট নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঝড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। উত্তাল সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে ভারতের কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় পাঁচ জেলে দেশে ফিরে এলেও এখনো খোঁজ মেলেনি বাকি ছয় জেলের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতে থাকা ৯০ জেলেসহ নিখোঁজ জেলেদের পরিবারগুলো চরম শঙ্কায়সহ অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে। নিখোঁজ ছগির আলমের এফবি সিরাজুল হক ট্রলারের জেলে মো. হাকিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে অর্ধাহারে অনাহারে চলছে তাদের সংসার। হাকিমের বাড়িতে গিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে সংবাদ প্রতিনিধির সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার পরিবার।
এসময়ে হাকিমের বৃদ্ধা মাতা পিতা ও তার স্ত্রী মোসা. লাকি বেগম বলেন গত ১৮ আগস্ট আমার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পরে আমার তিনটি শিশু সন্তান ও শ্বশুর শ্বাশুরীসহ ৫ জনের সংসার কিভাবে চলে কেউ সেই খবর রাখেনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এভাবে জীবনযাপন ও শঙ্কায় দিন কাটছে নিখোঁজ অন্যান্য পরিবার গুলোরও।
এ প্রসঙ্গে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, নিখোঁজ জেলে পরিবারগুলো যোগাযোগ করলে উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু সহায়তা করা হবে। ভারতে আটক জেলেদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯ আগস্ট আমি ভারতে গিয়ে অনেক চেষ্টা করে ৩২ জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হলেও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার যথাযথা সহায়তা না করায় ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভারতে ভেসে যাওয়া বাকি জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। তবে জেলেদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন