বরিশালের রাজনীতিতে সবচেয়ে সংঘাতপূর্ন মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা এলাকা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৪ সংসদীয় আসনের দুবারের সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সম্পাদক পংকজ দেবনাথকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পংকজ নাথের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা তা নিয়েও নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পঙ্কজ দেবনাথের বিরোধী গ্রুপের মন্তব্য এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেই বিপদ। কারন এখানে রয়েছে পঙ্কজ লীগ। এই লীগের অনুসারি না হলেই এমপির টার্গেট হতে হয়।
অব্যাহতির বিষয়ে পংকজ দেবনাথের বক্তব্য জানতে তাকে রোববার চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। ওই চিঠি সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপরই হিজলা-মেহেদিগঞ্জে পংকজ দেবনাথ বিরোধী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উল্লসে ফেটে পড়েন। বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরনের ঘটনাও ঘটে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস পংকজ দেবনাথ এমপিকে জেলা কমিটির উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেলা কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির পত্রের কপি পেয়েছে। পংকজ দেবনাথ আওয়ামী লীগের অন্য কোন শাখা বা অঙ্গ সংগঠনের পদে নেই। সে হিসাবে তিনি এখন আওয়ামী লীগের কেউ নন।
সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগ পংকজ দেবনাথকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে প্রেরন করে। কেন্দ্রীয় কমিটি ওই সুপারিশ অনুমোদন দিয়ে প্রথমেই জেলা কমিটির উপদেষ্টা পদ থেকে অপসারন করে পঙ্কজ দেবনাথকে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যরিষ্টার বিপ্লব বড়–য়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পংকজ দেবনাথকে জেলা কমিটি উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পংকজ দেবনাথকে এসব বিষয়ে লিখিত জবাব দিতে হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এমপি পংকজ দেবনাথের মুঠোফোনে একাধিবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে এক পর্যায়ে কল ফরোয়ার্ড করে রাখেন। পংকজ নাথ এমপি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি কেন্দ্রের একটি চিঠি পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে এখন কোন মন্তব্য করবেন না।
পংকজ নাথ এমপির আস্থাভাজন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, কেন্দ্র থেকে এমপিকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে শুনেছেন। তারাও যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাচ্ছেন না। খোরশেদ আলম ভুলুর দাবী, এমপি পংকজ ষড়যন্ত্রের শিকার।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুনসুর আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, এমপি পংকজ দেবনাথের নির্দেশে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। পঙ্গু হয়েছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তাদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালান। পংকজ অনেক আগেই আওয়ামী লীগে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অ্যাডভোকেট মুনসুর। ১২.৯.২০২২।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন