ইনকিলাব ডেস্ক : আন্তর্জাতিক চাপ ও প্রতিবাদকে অগ্রাহ্য করে জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনারা ভয়ঙ্কর অপরাধ অব্যাহত রেখেছে। নির্বিচারে গুলি করে শিশুসহ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের হত্যা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক নৃশংসতার সর্বশেষ আপডেট প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গা মিরর রিপোর্ট। এত বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের মায়োতাং গ্রামে বর্বর সৈন্যদের নৃশংস গণধর্ষণের শিকার হয় ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী এবং ২৫ বছর বয়সী এক নারী। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে পরের দিন ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই কিশোরী ইন্তেকাল করে এবং ওই নারীও গুরুতর অবস্থায় উপনীত হয়। ওই গ্রামেরই একটি স্কুলে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নারীকে সৈন্যরা জিম্মি করে রাখে। অন্য এক রিপোর্টে বলা হয়, ৪ ডিসেম্বর রাতে মায়োতাং গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ জন রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষত ও ২১ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রতে বার্মিজ সেনারা রোহিঙ্গা গ্রাম ঘেরাও করে শিশুসহ নিরপরাধ রোহিঙ্গা পুরুষদের নির্বিচারে গ্রেফতার করে এবং তাদের অনেককে ওই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। গ্রামটিতে কোনো নারী-পুরুষ নেইÑ এটা নিশ্চিত করতে তারা শিশুসহ সকল রোহিঙ্গা নারী জিম্মি হিসেবে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায়। রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি খালি করার পর সৈন্যরা নিকটবর্তী গ্রাম থেকে রাখাইন বৌদ্ধ চরমপন্থীদের ডেকে এনে রোহিঙ্গাদের ধন-সম্পত্তি, গৃহপালিত পশু ইত্যাদি লুট করতে সহায়তা করে। যেসব সম্পত্তি বহনের অযোগ্য সেগুলো রাখাইন উগ্রবাদীরা ধ্বংস করে দেয়। আক্ষরিক অর্থে, রান্নার পাত্র থেকে শুরু করে রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত কোনো কিছুই রেখে যায়নি তারা। এছাড়াও, ওই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এর ফলে রোহিঙ্গারা অনাহার-অর্ধাহারে ধীরে ধীরে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। তাছাড়া একটি কক্ষে আটক অসহায় নারীদের আর্তনাদের কণ্ঠ বাইরে অনেক দূর পর্যন্ত শোনা গেলেও কেউ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেনি। এসব নারীদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের আত্মসমর্পণের জন্য সৈন্যরা তাদের আটক রেখে নির্মম নির্যাতন চালায়। রাখাইন উগ্রপন্থীদের সহায়তায় সামরিক বাহিনীর ৫৫২-ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাংবাজার এলাকায় উত্তর বুতিদং গ্রামে রোহিঙ্গা মালিকানাধীন গবাদিপশুর খামারে গিয়ে সেখানে থাকা গবাদিপশু টেনে-হিচঁড়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে সেগুলো মেরে ফেলে। দুজন ‘নাতালা রাখাইন’ বা বিজিপি সদস্যরা সিভিল ড্রেসে একটি মোটরসাইকেলযোগে এসে এক বিধবার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আগুন তীব্র আকার ধারণ করলে তা আশেপাশের অন্য বাড়িগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। রোহিঙ্গা ভিশন, ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন