গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানের নিজ বাসভবনে মারা যান বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানায় বিএনপি।
মৃত্যুকালে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এক ছেলে ও এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী ২০০৯ সালে ইন্তেকাল করেছেন।
জানা যায়, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১৯৩৯ সালের ১০ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার দোগাছি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছয় দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের তিনটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
দলটি জানায়, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।
এরপর তার মরদেহ নিজ এলাকা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাদ জোহর উপজেলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে এই নেতার মরদেহ ঢাকায় আনা হবে এবং বাদ এশা গুলশানের আজাদ মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষে তাকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
তাঁর মৃত্যুতে রাজনীতিবিদসহ সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মেহেদী হাসান নামে একজন লিখেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমি বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি ও উনার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে যেন জান্নাত দান করেন।
মো. সিদ্দিক নামে একজন লিখেছেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এর মাগফিরাত কামনা করছি।
কায়েদ খান নামে একজন লিখেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ পাক আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা মরহুম শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেনকে জান্নাতবাসী করেন আমীন।
মো. ফারুক আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। প্রবীন এই রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের সৃষ্টি। মহান আল্লাহ পাক উনার সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে উনাকে জান্নাতবাসী হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করেন।
এমএম পান্নু মিয়া নামে একজন লিখেছেন, আমরা একজন অকুতোভয়, দেশপ্রেমিক, সাহসী মুক্তিযোদ্ধাকে হারালাম। শহীদ জিয়ার আদর্শের একজন খাটি মানুষ ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। আমি তার বিদেহী আত্মর মাগফেরাত কামনা করছি। মহান রব যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন আমিন।
বাবু গাজী নামে একজন লিখেছেন, অনেক রাজনীতিবিদ মরে গিয়েও মানুষের মাঝে অমর হয়ে থাকে, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন তাদের মধ্যে একজন।
মো. কাউসার হোসাইন হাওলাদার নামে একজন লিখেছেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। হে মহান আল্লাহ তায়ালা স্যারকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আ.লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ঢাকা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভার একজন সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। কিন্তু তাকে ১৯৯২ সালে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন। তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন