ভারত মহাসাগরে আধিপত্য স্থাপনে চলছে ভারত ও চীনের ঠান্ডা লড়াই। আর ঘটনাচক্রে কৌশলগত অবস্থানের ফলে এশিয়ার দুই মহাশক্তির সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে স্পষ্ট জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কা পাঞ্চিং ব্যাগ নয়। কোনও খণ্ডযুদ্ধের অংশ তারা হবে না।
গত আগস্ট মাসে ভারতের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে নোঙর ফেলে একটি চীনা নজরদারি জাহাজ। ফলে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে কলম্বো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও দেশকেই চটানোর মতো অবস্থায় নেই কার্যত দেউলিয়া দ্বীপরাষ্ট্রটি। দেশের অর্থনীতিকে ফের চাঙ্গা করে তুলতে হলে ভারত ও চীন দুই দেশেরই সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে শ্রীলঙ্কার। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে স্পষ্ট জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কা কোনও ‘খণ্ডযুদ্ধের’ অংশ হবে না।
বুধবার কলম্বোর ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে’ এক অনুষ্ঠানে বিক্রমসিংহে বলেন, “ভারত মহাসাগরে আধিপত্য স্থাপনে মহাশক্তিদের লড়াইয়ে শামিল হবে না শ্রীলঙ্কা। আমরা কোনও সামরিক জোটে শামিল হতে চাই না। আমরা চাই না প্রশান্ত মহাসাগরের সমস্যা ভারত মহাসাগরেও ছড়িয়ে পড়ুক। হামবানটোটা ইস্যুতে শ্রীলঙ্কা পাঞ্চিং ব্যাগ হবে না।” ইঙ্গিতে ভারত ও চীনকে বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “হামবানটোটা সামরিক বন্দর নয়। এটা বাণিজ্যিক বন্দর। তবে এর কৌশলগত অবস্থানের ফলে অনেকেই এমন কিছু ভেবে নেয় যা কাম্য নয়।”
উল্লেখ্য, গত মাসে শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে নোঙর ফেলে চীনের জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’। এটিকে গবেষণা ও সমীক্ষার কাজে ব্যবহার হয় বলে বেইজিং দাবি করলেও, এর মাধ্যমে মূলত নজরদারির কাজ চালানো হয় বলে দাবি ভারতের। আশঙ্কা, এই জাহাজে মজুত অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী সেন্সর ও রাডারের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর নজরারি চালাবে লালফৌজ। ভারতীয় ফৌজের ইউনিট ফর্মেশন, মিসাইল সাইট, যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের সন্ধান পেতেই এই জাহাজ পাঠিয়েছে চীন। তাই কোনওমতেই এই জাহাজটিকে শ্রীলঙ্কা জায়গা দিক তা চাইছিল না নয়াদিল্লি। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন