আন্দোলন বা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংগঠন চাঙ্গা করে বিএনপিকে রাজপথ দখলের কোন সুযোগ দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য অগ্রিম প্রস্তুতিও নিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি যেখানেই মাঠে নেমে অসাংগঠনিক, অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করবে সেখাইে প্রতিরোধ করবে। দলের মনোভাব ও নির্দেশনা ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের পোঁছে দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বিএনপিকে কেন্দ্রীয় ভাবে কর্মসূচি পালন করতে কোন বাধা দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, বিভিন্ন অডিটরিয়ামে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে তাতে আওয়ামী লীগের চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু পাড়া মহল্লায়, অলিতে গতিতে কর্মসূচি পালন করলে তা অরাজনৈতিক ও অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করবে ক্ষমতাসীনরা। এছাড়া বিএনপি নৈরাজ্য, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর করা, জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি জানে দেশের জনগণ তাদের পাশে নেই। বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা নির্বাচনের অযোগ্য। তারা নির্বাচনে কখনো জয়লাভ করতে পারবে না। তাই নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করা তাদের লক্ষ্য। সেজন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা বাদ দিয়ে অসাংগঠনিক কাজ করছে দলটি। পাড়া মহল্লায় মিছিল ভাঙচুর করে জনমনে ভীতি তৈরী করছে। পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাধাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বারবার পুলিশের উপর হামলা করছে। এধরণের কর্মসূচি কখনোই রাজনৈতিক নয়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ইনকিলাবকে বলেন, একটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। এতে আমাদের চিন্তা বা ভাবনার কিছু নেই, এটি তাদের অধিকার। কিন্তু মাঠের রাজনীতি যখন পাড়া মহল্লার অলি-গতিতে হয় তখন তা রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে না। পুলিশের উপর হামলা হয়, নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়, জনগণের জানমালের ক্ষতি করা হয় তখন তা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের কারণে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আওয়ামী লীগও বসে থাকবে না। আওয়ামী লীগ জনগণের দল হিসেবে সব সময়ই জনগণের পাশে আছে, থাকবে। জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিরোধ করবে আওয়ামী লীগ।
এদিকে আজ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সাথে ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে কী কী কর্মসূচি পালন করা হবে সে বিষয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি আগামী দিনে রাজধানীতে বিএনপিকে কীভাবে মোকাবেলা করা হবে সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর একজন সদস্য বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং মিডিয়াতে নেতারা কী ধরণের বক্তব্য ও নির্দেশনা দেন এবং দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের কাছে যে বার্তা যাবে উভয় বিষয়ে বুঝে শুনে পালন করার জন্য নির্দেশনা থাকবে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি ইনকিলাবকে বলেন, ইতোমধ্যে এক হাজার ইউনিট কমিটি গঠনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে সংগঠন। বর্তমানে ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন চলছে। সংগঠন শক্তিশালী করে বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ সব সময় মাঠে আছে। বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি বাদ দিয়ে অসাংগঠনিক কাজ করলে, জনগণের জানমালের এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা, ওয়ার্ডের সম্মেলনের মাধ্যমে মাঠে থাকবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সংগঠন শক্তিশালী করার মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবো।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মাসব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। প্রতিটি থানায় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ি ও কদমতলী থানায় মিছিল হয়েছে। আজ শ্যামপুর থানায় মিছিল। মহানগরের নেতাদের প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। যুবলীগের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন