বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নদী ভাঙনে নিঃস্ব মানুষ

ইনকিলাব রিপোর্ট | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, ফরিদপুর ও মাদারীপুরে ভাঙনে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ষ ভাঙনরোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দেয় : ড. আইনুন নিশাত ষ ১২ জেলার ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি নদীতে বিলীন হতে পারে : সিইজিআইএস

প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই দেশে বন্যাকে দুর্যোগ হিসেবে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়; কিন্তু নদীপাড়ের কৃষিজীবী সাধারণ মানুষের কাছে নদীভাঙন হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যা ১২ মাস ধরে নানা গতিতে চলে। নদী ভাঙনে বসতভিটা জায়গা-জমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের এক জরিপে বলা হয়, ভাঙনে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। এ বছর দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১২ জেলার ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি নদীতে বিলীন হতে পারে। এ কারণে ফসলি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি হারাতে পারেন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। নদীভাঙন এ দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকে অন্য দুর্যোগের চেয়ে বেশি মাত্রায় ধ্বংস করছে। অথচ এই ভাঙন মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি ও উদ্যোগ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার নদীভাঙন রোধে প্রচুর অর্থ ব্যয় করলেও তা সমন্বিত ও পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে না। এতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।

বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত ইনকিলাবকে বলেন, নদীভাঙন বিষয়টাকে সরকার কতটা গুরুত্বের সাথে দেখছে সেটা বড় প্রশ্ন। ভাঙন রোধে আজও টেকসই বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এর ফলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার বিষয়ে প্রশ্নের জন্ম দেয়। নদীভাঙন রোধে সরকার প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মাধ্যমে নদীর তীর রক্ষায় ও বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণে প্রচুর অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, হচ্ছে। তবে এতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে, সে অনুপাতে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সমন্বিত পরিকল্পনার অভাব এবং অনিয়ম দুর্নীতির ফলে নদী রক্ষায় যেসব বাঁধ নির্মাণ করা হয়, সেগুলো কিছুদিনের মধ্যেই ভেঙে যায়। প্রতি বছরই বাঁধ ভাঙে, আবার তা মেরামত করা হয়।

এ বছর ভরা বর্ষায় দেশে তেমন কোনো বন্যা হয়নি। ফলে অন্যান্য বছরের মতো এবার জুলাই-আগস্টে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপে দেখা যায়নি। তারপরও এসব অঞ্চল ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) পূর্বাভাস বলছে, এ বছর দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১২ জেলার ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি নদীতে বিলীন হতে পারে। এ কারণে ফসলি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি হারাতে পারেন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা সিইজিআইএস মূলত যমুনা, গঙ্গা ও পদ্মা অববাহিকার সম্ভাব্য ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে থাকে। এবার যমুনায় ১৪টি স্থানে, গঙ্গার ৭টি ও পদ্মার ১টি স্থানে ভাঙন বেশি হতে পারে বলে তারা অনুমান করছে। সিইজিআইএসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এবার দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে ভাঙন বেশি হবে। জেলাগুলো হলোÑ কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, ফরিদপুর ও মাদারীপুর। এসব জেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে ১৬৫ হেক্টরে মানুষের বসতি আছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৭৯০ মিটার বেড়িবাঁধ, ২ হাজার ২৬৫ মিটার সড়কপথ ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। এর মধ্যে জেলা, উপজেলা ও গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছেÑ ২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন, ১৬টি মসজিদ ও ৫টি হাটবাজার, ২টি কবরস্থান, ২টি বেসরকারি সংস্থার কার্যালয়, এতিমখানা, বাসস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মাদারীপুরের ৫১৫ হেক্টর, কুষ্টিয়ার ২১৫ হেক্টর এবং টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের প্রায় ২০০ হেক্টর এলাকায়।

ভাঙনের কারণ হিসেবে সংস্থাটি বন্যার পানির স্রোত ও নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলাকে দায়ী করেছে। মূলত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় নদী তীরবর্তী যেসব এলাকার মাটিতে বালুর পরিমাণ বেশি থাকে, সেসব এলাকায় ভাঙন বেশি হয়। পদ্মা ও যমুনার তীরে এ ধরনের মাটি বেশি থাকায় ভাঙনও বেশি হচ্ছে।

সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান বলেন, আমরা নিয়মিত ভাঙনের সম্ভাব্য শিকার এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সরকারকে তথ্য দিই। সরকার থেকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু দেশের অনেক এলাকায় অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে হঠাৎ ভাঙন বেড়ে যায়। তাই যথাযথ বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার ভিত্তিতে কোনো এলাকা থেকে কী পরিমাণে বালু উত্তোলন করা যাবে, তার একটি কঠোর নিয়ম থাকা উচিত।

নদী ভাঙনের তথ্য নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠনো রিপোর্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
মাদারীপুর থেকে স্টাফ রির্পোটার আবুল হাসান সোহেল জানান, থেমে থেমে চলছে মাদারীপুরের বিভিন্নস্থানে নদীভাঙন। বিশেষ করে শিবচর উপজেলার পদ্মা নদীর ভাঙনে পাঁচটি ইউনিয়নে অসংখ্য বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। নদী ভাঙনে সম্প্রতি শিবচর উপজেলার সন্যাসীরচর, চরজানাজাত, দত্তপাড়া, নিলখী ও বহেরাতলা ইউনিয়নে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের শিকার হয়েছে দুটি বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য পরিবার উঁচু সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙনের শিকার সন্নাসীর চর ৮নং ওর্য়াডের জামে মসজিদটি। উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটির পাশের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকও নদী ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে ইউনিয়নটির কাজীরসুরা বাজার। অপরদিকে রাজৈর উপজেলায় কুমার নদের অব্যাহত ভাঙনে বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে। নানা অজুহাতে বালুদস্যুদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, স্রোত ও ট্রলার চলাচলে ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙছে কুমার নদের পাড়, গৃহহারা হয়ে কাঁদছে নদীর পাড়ের মানুষ।

মানিকগঞ্জ থেকে শাহীন তারেক জানান, জেলার ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ঘিওর হাটের ৮টি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় অর্ধশত বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওরের পরান গরুর হাট, কুস্তা কবরস্থান, কুস্তা বেইলি ব্রিজসহ শতাধিক পরিবার। ভাঙনরোধ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, এবছর নদী ভাঙনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘিওর উপজেলার কুস্তা ও ঘিওরের গরুর হাট এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে নদীর তীরবর্তী এলাকার হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাঙনরোধে ১৫ কোটি টাকার জিওব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে প্রয়োজনের তুলনায় জিওব্যাগ কম ফেলায় তাতে কোনো ফল হয়নি।
ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জাহিদ জানান, জেলা সদরসহ সদরপুর, চরভদ্রাসন, আলফাডাঙ্গায় উপজেলার পদ্মা নদী ও মধুমতির নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রচÐ নদী ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। দুটি নদীর ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছে। তিন উপজেলার ৫টি ইউনিয়ের ২৪টি গ্রামের শত শত বিঘা ফসলি জমি স্কুল, মাদ্রাসা, মন্দির, হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ মূল্যবান স্থাপনা পদ্মা ও মধুমতি নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে, ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গী খেয়াঘাট, গোলডাঙ্গী, উস্তাডাঙ্গী এবং ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গীর কমপক্ষে তিনটি গ্রাম নদীতে ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি এবং প্রায় চার শত বাড়ি-ঘর। গত ৭ দিনে একমাত্র ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙী গ্রামের ৭০-৮০টি বসত ভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় দেড়শত পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে।

ফেনী থেকে মো. ওমর ফারুক জানান, জেলার ফুলগাজী উপজেলায় মুহুরী নদীর দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে মানুষের ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধান, মৎস্য ঘের ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ভারতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহমান মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীতে ডুকে পড়লে নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে গত রোববার বিকেলে বিপৎসীমার ৮০ মেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোববার রাত থেকে মুহুরী নদীর পাড়ে বসবাসরত মানুষ নদীর বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে মাটির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, নদীতে পানির তীব্র চাপের কারণে ভোররাতে মুহুরী নদীর দুটি স্থান ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর অংশে বড় ভাঙনের দেখা দেয়। মুহূর্তে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকে এবং মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমিতে রোপা আমনের ধান ক্ষেত, মৎস্য ঘের, শত শত পুকুরের মাছ, সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে যায়।

টাঙ্গাইল থেকে আতাউর রহমান আজাদ জানান, যুমনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও গত কয়েকদিন ধরে কমতে শুরু করেছে। ফলে নদী তীরবর্তী টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুর, কালিহাতী, সদর, নাগরপুর ও বাসাইলের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে করে নদী পাড়ের মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় ভ‚ঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙনরোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে মোশাররফ হোসেন বুলু জানান, তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা কখনো বাড়ে, কখনো কমে। কিন্তু ভাঙন বন্ধ হয় না। গত কয়েকদিন থেকে নদীভাঙন রোধে ফেলা জিও ব্যাগসহ নদীতীর দেবে যাচ্ছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ। বর্তমানে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের পাড়াসাদুয়া, কাপাসিয়া ইউনিয়নের পাগলারচর, বাদামেরচর, ভাটি কাপাসিয়া ও উজান বুড়াইল, চন্ডিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের ভিটে-মাটি, জমা-জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো মানবেতর জীবন-যাপন করছে। জানা যায়, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড পাড়াসাদুয়া গ্রামে নদীভাঙন তীব্রতর হয়েছে। গত এক সপ্তাহে পাড়াসাদুয়া গ্রামে ২৫/৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ থেকে মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, পদ্মা নদীর ভাঙনের মুখে সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের সর্দারকান্দি ও শম্বু হালদারকান্দি গ্রামের পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি রাতারাতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আকস্মিক এ ভাঙনে তিন শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পরেছে। নমকান্দি গ্রামের প্রধীপ গুপ্তের স্ত্রী তুলশী রাণী বলেন, রাতের বেলায় ভাঙন শুরু হয়। একটি ঘর ভেঙে নিতে পেরেছি অনেক মালামাল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের মুখে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের কালীপুরা গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পরেছে। ভাঙনে কালিপুরা গ্রামের একটি বিশাল অংশ নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। এ ছাড়া জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ফকিরপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলায় শত কোটি টাকায় নির্মিত সেতুর পিলারের বøক ধসে পড়ছে। সেতুর মূল অংশ, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙনরোধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন