প্রমত্তা পায়রা নদীর ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধিতে শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক সরে যাওয়ায় ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে বরগুনার আমতলী পৌরশহর। ২৩ বছরেও সংস্কার হয়নি শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক। দ্রুত সংস্কার করা না হলে বিলিন হয়ে যেতে পারে আমতলীর পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস, খাদ্যগুদাম, মুক্তিযোদ্ধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ সহস্রাধিক বাড়ীঘর। দ্রুত ব্লক নির্মাণের দাবী জানান এলাকাবাসী ও পর্যটকরা।
জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ফেরীঘাট এলাকা থেকে পাউবোর অফিস পর্যন্ত ১২০০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধিনে সিসি ব্লক স্থাপন করা হয়। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও রোয়ানু, বুলবুল ও আম্ফানের প্রভাবে আমতলী পৌর শহর সংলগ্ন পায়রা নদীর সিসি ব্লক সরে ও ভেঙ্গে যাচ্ছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৪ সালে সিডর প্রকল্পের আওতায় আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ১২০০ মিটার ব্লক মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমবিইএল ১১৫ মিটার পায়রা নদীর তীর সংরক্ষণে সিসি ব্লক সংস্কার করে অবশিষ্ট কাজ ফেলে রেখে চলে যায়। গত ২৩ বছরে সংস্কার না করায় পায়রার ভাঙ্গনে অধিকাংশ ব্লক নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে বিলিন হয়ে গেছে অনেক স্থাপনা।
রবিবার পায়রা নদী সংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, পায়রা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। এতে ব্লকগুলো সরে যাচ্ছে এবং দুর্বল অনেক ব্লক ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে ব্লক সরে যাওয়ায় পায়রা নদী এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সৌন্দার্য হারিয়ে যাওয়ায় আগের মত তেমন পর্যটকরা বেড়াতে আসেন না।
আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, নদী ভাঙ্গনে প্রতিদিনই পৌরশহরের আয়তন ছোট হচ্ছে। ভাঙ্গনে বহু স্থাপনা হুমকির মুখে পরেছে। দ্রুত শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কার করা না হলে ভাঙ্গনের ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পাবে। এ শহরকে রক্ষায় তিন কিলোমিটার পায়রা নদীর তীরে সিসি ব্লক নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে দ্রুত সিসি ব্লক নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আজিজুর রহমান সুজন বলেন, শহর রক্ষা বাঁধের প্রজেক্টে আমতলী পৌর শহর রক্ষায় পায়রা নদীর ব্লক সংস্কারের প্রস্তাবনা দিয়েছি।
পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে আমতলী পৌর শহরের শহর রক্ষা বাঁধসহ নদী ভাঙ্গন রোধে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বাজেট পাওয়া গেলে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন