সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ১নং লামাকাজি ইউনিয়নের লামাকাজি বাজার মসজিদ, মাদরাসা ও বাজার কমিটির প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও গোলাম কিবরিয়া তালুকদার নামের এক ব্যবসায়ি নেতা। তিনি বিদ্যাপতি সাংগিরাই গ্রামের গোলাম মোস্তফা তালুদারের পুত্র ও লামাকাজি বাজার পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি ও ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। গত আড়াই মাস নিখোঁজ। গতকাল রোববার পর্যন্ত তিনি এলাকা ছাড়া রয়েছেন। বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলছেন, গোলাম কিবরিয়া প্রায় অর্ধ কোটি টাকার আত্নসাৎ করে লাপাত্তা রয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, লামাকাজি ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম নিয়ে গঠিত বাজার পরিচালনা কমিটি। বিগত কমিটি ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে গোলাম কিবরিয়াকে নগদ ৬ লাখ টাকাসহ লামাকাজী বাজারের সেক্রেটারি দায়িত্ব পান। এরপর বাজার সাবলিজ বাবদ আয় হয় ১২ লাখ টাকা। গরু বাজার সাবলিজ বাবদ ৫৩ লাখ টাকা। বাজারে দোকান ভিটা বিক্রয় বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা। সর্বমোট ৯৬ লক্ষ টাকার আয় থেকে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ফান্ডে থাকার কথা এমনটাই জানিয়েছেন বাজরের প্রতিষ্ঠিত কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা। তারা বলেন, গত দুই বছর থেকে গায়ের জোরে তিনি কোন আয়-ব্যায়ের হিসাব কমিটিকে দিচ্ছেন না। এনিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশায় বাজার, সমজিদ ও মাদরাসা কমিটি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকে নানা মন্তব্য করছেন।
মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লী আব্দুল মালিক জানান, গত দু’বছরে বাজার ফান্ড থেকে মসজিদে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার আসার কথা। কিন্তু আসেনি। জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম লামাকাজি মাদরাসার মোহতামিম ও বাজার কমিটির সদস্য মুফতি ময়নুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতি বছর বাজার কমিটি থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাদরাসায় পান। এবছর এখনও কোন টাকা পাননি। বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিরন মিয়া জানান, সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়ার দুই আড়াই মাস থেকে কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারের বিগ এমাউন্ট তার কাছে রয়েছে। কোন হিসাব-কিতাব পাচ্ছিনা। আমরা তার পরিবারের কাছে আমাদের প্রতিনিধি পাটিয়েছি। তার বাবা গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন ছেলে কোথায় আছেন কোন খোজ পাচ্ছেন না। এছাড়াও বাজার কমিটির সহ-সভাপতি একেএম দুলাল, ব্যবসায়ি পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি জানে আলম, ব্যবসায়ি গোলাম মৌলাসহ একাধিক ব্যক্তির বক্তব্য, সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া বাজারের প্রায় ৪০/৪৫লাখ টাকা আত্নসাৎ করে সম্ববত প্রবাসের উদ্দ্যেশ্যে দেশ ত্যাগ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে গোলাম কিবরিয়ার বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া য়ায়নি। তার চাচাত ভাই ইমরানের মোবাইলে একাধিক বার কল করলে ফোর রিসিভ করেননি। সাধারণ মানুষের ধারণা গত ৩১ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। তিনি সতন্ত্র আনাসর প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজয় হয়েছেন। হয়তো বাজারের ফান্ড খরচ করে ফেলেছেন, তাই তিনি এখন লাপাত্তা।
এ ব্যাপারে লামাকাজি ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, গোলাম কিবরিয়া বাজার কমিটির সেক্রেটারি। তার কাছে বাজারের বড় একটি ফান্ড রয়েছে। এই ফান্ড থেকে বাজারের মসজিদ ও মাদরাসায় টাকা যায়।
কিন্তু আড়াই মাস থেকে সে উধাও রয়েছেন। তাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তার এমন কান্ডে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন