বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গৃহবধূকে নিজঘরে বেঁধে মারধর করেছে গ্রাম্য প্রভাবশালীরা

সিংড়ায় গ্রাম্য দলাদলির জের

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ছাতারদিঘী ইউনিয়নের কুমিড়া গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগে দুই সন্তানের জননীকে নিজঘরে বেঁধে ব্যাপক মারপিট করেছে গ্রাম্য প্রভাব শালীরা। গৃহবধূ ঐ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে তিনি সিংড়া আমলী আদালতে স্বামীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী কুমিড়া গ্রামের জান্টুর স্ত্রী জেসমিন বেগম জানান, প্রায় ২০ বছর আগে তার বিয়ে হয়। বড় ছেলের বয়স যখন ৯ বছর তখন তার স্বামী তাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেন। ওই সময়ে তিনি মামলা করলে আদালতের নির্দেশে আবার সংসারে ফিরলেও স্বামীর মন পাননি। ইতোমধ্যে তার দ্বিতীয় ছেলের বয়স হয়েছে প্রায় ৬ বছর। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি ছেলেসহ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় স্বামীসহ এলাকার কিছু প্রভাবশালী তার ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। এ সময় তারা স্থানীয় নিখিড়া পশ্চিম বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আহসান হাবিব শাহীনকে ধরে নিয়ে আসে। ঘরে প্রবেশ করেই তারা তাকে ও ওই শিক্ষককে বেদম মারপিট করে চাপ দিতে থাকে যাতে তিনি স্বীকার করেন ওই শিক্ষকের সাথে তার অনৈতিক সম্পর্ক আছে। এতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের দুইজনকেই ব্যাপক মারপিট করে পুলিশে দেয়া হয়। ওই ঘটনার পর ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি সিংড়া আমলী আদালতে মামলা করেছেন। তিনি বলেন তিনি তার স্বামী-সন্তান আর সংসারে ফিরতে চান। একই সাথে ওই পরিকল্পিত ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আহসান হাবিব শাহীনের ভাই ইউপি সদস্য সোহেল রানা জানান, তার ভাই ওই গ্রামের গ্রাম সভাপতি। তারা আ.লীগ পরিবারের সদস্য ও সক্রিয়কর্মী। আর ওই অভিযুক্তরা বিএনপি সমর্থিত। এনিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বাইরে এলাকার নেতৃত্ব ছাড়াও খাস জলাশয়ের লীজের টাকা আর জমিজমা নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব চলছিল। এইসকল স্বার্থ হাসিলে তাদেরকে ঘায়েল করতেই ওই নাটক সাজানো হয়েছিল।
তিনি দাবি করেন, ওই রাতে তার ভাই পাশের বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ওই দুস্কৃতিকারীরা মুখে গামছা পেঁচিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ওই নাটক করে তাদের দুই জনকে মাররপিট করে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জান্টু জানান, তিনি ওই দিন বিকালে মাছ ধরতে পাশের বিলে যান। খবর পেয়ে রাত ১১ টার দিকে বাড়ি ফেরেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, স্থানীয় লোকজনের মধ্যে তার আত্মীয়রাও ছিল। তারা আত্মীয় ও এলাকাবাসী হিসাবে তার স্ত্রীকে মারপিট করেছে দাবি করে জানান, ঘটনার পর তার দুই ছেলেকে মায়ের, সাথে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা তার মায়ের ওই শিক্ষকের সাথে আগে থেকেই ফোনে যোগাযোগ ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিংড়া সর্কেল এএসপি জামিল আকতার জানান, ওই গৃহবধূ ও শিক্ষকের মোবাইল ফোনের কল ডাটা রেকর্ড (সিডিআর) এনালাইসিস করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে জানা যাবে, তাদের মধ্যে কোন পরীকয়া ছিল কি-না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন