স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা হত্যার রেশ কাটতে না কাটতে এবার রিতু আক্তার ফারজানা নামের আরেক স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ছাত্রীটির পিছন থেকে মুখ চেপে ধরে এক কিশোর এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগী ছাত্রী। তবে তার মুখে মাস্ক থাকায় হামলাকারিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত রিতু আক্তার ফারজানা সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ জামালপুর গ্রামের মহিন উদ্দিনের মেয়ে। সে স্থানীয় নলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
আহত ফারজানা বলেন, রোববার দুপুর ২টার দিকে বিদ্যালয় থেকে পায়ে হেঁটে একা বাড়িতে যাচ্ছিল সে। পথে আটখোলা বাড়ির সামনে পৌঁছালে একটি অটোরিকশা এসে তার পিছনে দাঁড়ায়। তখনও সে হাটতে ছিলো, কোন কিছু বুঝে ওঠার আগে অটোরিকশা থেকে মাস্ক পরা এক কিশোর তাকে পিছন থেকে মুখ চেপে ধরে ধারালো কিছু দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করে। পরে পিছন থেকে একটি সিএনজি আসতে দেখে পুনঃরায় অটোরিকশায় উঠে দ্রুত পালিয়ে যায় হামলাকারী। বিষয়টি দেখতে পেয়ে দ্রুত এগিয়ে এসে অন্য শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ফারজানাকে উদ্ধার করে তার চাচাতো বোন পাপ্পি। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি বিদ্যালয়ে জানানোর পর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ফারজানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ইমাম উদ্দিন বলেন, স্থানীয় কিছু বখাটে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে ছাত্রীদের প্রায় উত্ত্যক্ত করে। প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিবার বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, কিন্তু কিছুদিন পর তারা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠে। এ ঘটনায় জড়িতকে চিহিৃত করে গ্রেফতারের দাবি করেন তিনি। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদ হাসান বলেন, স্কুলছাত্রীটির গলায় ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তকে শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অদিতার অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মূল আসামি আবদুর রহিম রনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। বর্তমানে সে জেলা কারাগারে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন