পুলিশের সামনেই নিজের জমি ও বাড়ি রক্ষার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে মা ও মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে সেখানে উপস্থিত ছিল। শরীরে কেরোসিন ঢালার পর উপস্থিত কয়েকজন ওই নারীকে বাধা দেন। পুলিশ তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা হলেন-নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও বরপা এলাকার জুনায়েদ আহমেদ খানের স্ত্রী শিরিন খান (৩৫), মেয়ে শারমিন খান (১৬) ও ছেলে জহির খান (১০)।
শাহবাগ থানার এসআই আল-মোমেন জানান, জাতীয় প্রেসক্লাব সংলগ্ন পুলিশ বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে ওই নারী তার সন্তানসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ তিনি তার ব্যাগ থেকে একটি কেরোসিনের বোতল বের করে নিজের শরীর এবং সন্তানদের শরীরে ঢালতে শুরু করেন। পাশ থেকে এটি দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাত থেকে বোতলটি নিয়ে নেয়া হয়। এরপর তাদের পাঠানো হয় হাসপাতালে।
তিনি জানান, তারা নারায়ণগঞ্জের বাসা থেকেই সম্ভবত ঘুমের ওষুধ সেবন করে এসেছিলেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে পাকস্থলি পরিষ্কার (স্টমাক ওয়াশ) করানোর পর মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ওই নারী ৩ বছরের মেয়ে সাজিদা খানকে ঘুমের ওষুধ সেবন করাননি। সে সুস্থ্ আছে। তবে যতটুকু প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সম্পদ নিয়ে কোনো বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
আত্মহত্যার চেষ্টাকারী শিরিন খান জানান, আগেও তিনি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। দুদিন আগেও তিনি গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন। তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার বরপা এলাকায়।
ওই নারী বলেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার বরপা এলাকায় তিনি আট বছর আগে জমি কিনে বাড়ি করেছেন এবং সেখানে বসবাস করছেন। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান দীর্ঘদিন ধরে তাকে বাড়ি ছাড়তে চাপ দিয়ে আসছেন। হান্নান আমার নামে মামলা করেছে এবং হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। গত দুই মাস ধরে আমাকে বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ। তিনি এসব যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখন কোথায় আছেন আমি জানি না।
শিরিন খান বলেন, আমি স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি। পুলিশকে জানালে তারা সহযোগিতা করছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। হান্নান আমাদের আর বাড়িতে না যেতে বলছে। জমির দলিলপত্র সব দিয়ে দিতে বলছে। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো উপায় না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি। আমার আর কোনো উপায় নেই। আমার মেয়েটার ব্রেনে সমস্যা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন