সিলেটে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৪ তরুণীর ওপর অভিযোগ পাওয়া গেছে নির্যাতনের। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ চার তরুণী নিজেদের হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। এরপরই সংশ্লিষ্টরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সিলেটের সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র খাদিমনগরে এ ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতিতা চার তরুণীর অভিযোগ, ‘প্রশিক্ষক ও স্টোরের দায়িত্বে থাকা দেলওয়ার হোসেন ও অফিস সহকারী আনোয়ারা বেগম নির্যাতন করেন তাদের উপর। এমনকি ঘটনার দিন সকাল ১১টার দিকে প্রশিক্ষক দেলওয়ার হোসেন তাদের সাথে করেছেন খারাপ আচরণ। দীর্ঘদিনের নির্যাতন-অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তারা।’
বর্তমানে ওই চার তরুণী চিকিৎসাধীন আছেন ওসমানী হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে।
চিকিৎসাধীন কলি বেগম সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন থেকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয় তাদেরকে। দেলওয়ার এবং আনোয়ারা এ নির্যাতনের হোতা। মাঝে মধ্যে অফিস সহকারী আনোয়ারা জুতাপেটাও করেন তাদেরকে। এদিন সকালে খাবার নিয়ে প্রশিক্ষক দেলওয়ার খারাপ কথাবার্তা বললে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩৮ তরুণী ও ২ শিশু মিলে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের মোট বাসিন্দা ৪০ জন। এদের মধ্যে কিছুদিন আগে তাদের সাথের এক তরুণী বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। ওই তরুণীর শিরনী হবে আজ শুক্রবার। মূলত এ শিরনী নিয়েই বকাঝকা করেন দেলওয়ার।
তবে অভিযুক্ত প্রশিক্ষক ও স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা দেলওয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই প্রশিক্ষণার্থীরা সামান্য কিছু হলেই হাত কেটে ফেলে। এর আগেও একাধিকবার হাত কেটে ফেলে তারা নিজেরাই। আমি মাত্র পাঁচ দিন ধরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি স্টোরের। এর আগে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতেন আনোয়ারা বেগম।’
দেলওয়ার আরও বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছিল শিরনির জন্য নেই অতিরিক্ত কোনো বরাদ্দ, স্টোরে যা বরাদ্দ সেগুলো দিয়েই করা হবে রান্না। কিন্তু তারা সেগুলো শুনতে চায়নি। তাই কোনও কারণ ছাড়াই ঘটিয়েছে তারা এমন ঘটনা। ’
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই সিলেটের সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমণি নিবাসে দুই মাসের এক শিশু হত্যার ঘটনায় সিলেটের মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে এখনও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন