ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। একই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে, বেড়েছে তার থেকে বেশি। তবে দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
এদিকে সূচক ও লেনদেন বাড়ার দিনে ডিএসইতে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে আট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে। এরপরও লেনদেনের এক পর্যায়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
এই আট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, মেট্রো স্পিনিং, বিডিকম অনলাইন, বিবিএস কেবলস, ম্যাকসন স্পিনিং, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, কেয়া কসমেটিকস এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইনাল। লেনদেনের শেষদিকে দিনের সর্বোচ্চ দামে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল পরিমাণ শেয়ার ক্রয়ের আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে যায় বিক্রয় আদেশের ঘর।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দরপতন হয়। এতে সপ্তাহজুড়েই কমে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। পাশাপাশি কমে বাজার মূলধন। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তবে লেনদেনের শেষদিকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমে যায়।
এতে একদিকে দাম বাড়ার তালিকা ছোট হয়, অন্যদিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতাও কমে। লেনদেনের শুরুর দিকে ডিএসইতে প্রায় দেড়শ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও লেনদেন শেষে ১১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির। আর ১৭৭টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৩১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৫৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ২১৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩১৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ১২১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১০০ কোটি ৯৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, কপার টেক, শাইনপুকুর সিরামিকস, বিবিএস কেবলস, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন এবং বসুন্ধরা পেপার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৫টির এবং ১০৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন