পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সরকারবিরোধী নতুন সমাবেশের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। এ লক্ষ্যে দলীয় কর্মীদের ইসলামাবাদে ‘হাকিকি আজাদি মার্চ’-এর জন্য প্রস্তুত হওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, আগামী ৯ অক্টোবর মহানবী (সা.) এর জন্মবার্ষিকীর পর যেকোনো সময় দলীয় কর্মীদের লংমার্চের ডাক দেওয়া হতে পারে।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, পাকিস্তানের ফেডারেল রাজধানী ইসলামাবাদের বানি গালার বাসভবনে অনুষ্ঠিত দলীয় বৈঠকের সময় ইমরান খান সোমবার খাইবার-পাখতুনখাওয়া এবং পাঞ্জাব প্রদেশের দলীয় কর্মীদের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চূড়ান্ত রাউন্ডের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এবারের স্বাধীনতা মিছিল ও সমাবেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বাস্তবায়িত হবে’। সোমবারের এই বৈঠকে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি, পারভেজ খট্টক এবং ইয়াসমিন রশিদসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করে আসছেন ইমরান খান। এসব সমাবেশে তিনি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন। এ নিয়ে দেশটির রাজনীতিতে উত্তাপ বিরাজ করছে।
মূলত, আগামী বছরের অক্টোবরে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে নির্বাচনী সমাবেশ করছেন ইমরান খান। তার এসব সমাবেশ ঘিরে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে রয়েছে। তবে ইমরান খান বলছেন, তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পড়েছে সরকার।
মূলত পাকিস্তানে আগাম নির্বাচনের দাবিতে বর্তমান জোট সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে পিটিআই।
পিটিআই প্রধান ইমরান খান দীর্ঘ সময় ধরে বারবারই বলে আসছেন যে, ‘শুধুমাত্র আগাম নির্বাচনই পাকিস্তানে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটাতে পারে’। ইমরানের দাবি, সময়মত নির্বাচন হলে দেশ আজ যে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে তা থেকে রক্ষা করত।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, পাকিস্তানের বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় হলো দেশে নতুন সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করা।
গত মাসে পাঞ্জাবের রহিমিয়ার খান জেলায় একটি মহাসমাবেশে বক্তৃতা করার সময় ইমরান খান বলেছিলেন, সময় হলে তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চূড়ান্ত আহ্বান জানাবেন। তিনি তখন জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি নিশ্চিত যে- তিনি ‘এক বলে তিন উইকেট নিতে পারবেন’।
এদিকে রাজধানী ইসলামাদে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যেই ১৪০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং এআরওয়াই নিউজের তথ্য অনুসারে, শহরজুড়ে যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
অবশ্য ইমরান খান আগাম নির্বাচনের দাবি জানালেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-(নওয়াজ) এর প্রধান নওয়াজ শরিফ নির্ধারিত সময়েই পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে সম্মত হয়েছেন। সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন