পর্যটন নগরী সাগর কন্যা কুয়াকাটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্পট মিস্ত্রীপাড়া। যেখানে রয়েছে ৩৬ ফুট উচু রাখাইন বৌদ্ধবিহার। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকানপাঠসহ বিশাল রাখাইন মার্কেট। কুয়াকাটা-জিরোপয়েন্ট থেকে প্রায় ১০ কিলো পূর্ব উত্তরে অবস্থিত এই মন্দিরটি। সেখানে প্রতিদিন যাতায়াত করছে হাজার হাজার পর্যটক। গত ২ বছর ধরে প্রধান সড়কটি চলাচলের জন্য একদম অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পরই ব্যাপক ভ্রমণ পিপাসুদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার তো ওই ভাঙাচুড়া রাস্তা তো যাচ্ছেই না বরং মাঝে মাঝে গেলেও তা বিরুপ মন্তব্য করে চলে আসে। প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে অনেক কষ্ট করে অটোগাড়ি ও অটো ভ্যানে করে দর্শনীয় স্থানটি দেখতে গেলেও ভোগান্তির কোন শেষ থাকে না। তাই দ্রুত সড়কটি প্রশস্তসহ সংস্কারের দাবি জানান পর্যটক ও পর্যটন শিল্পের সাথে থাকা সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে জানা যায়, কুয়াকাটার অন্যতম দর্শনীয় স্পট রাখাইন বৌদ্ধবিহার মিস্ত্রিপাড়া প্রায় ১০ কিলো রাস্তা যাতায়াতের জন্য খুবই বেহাল দশায় পরিনিত হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক অনেক কষ্টে এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করছে। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নিয়ে অভিযোগ তুলেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যটন কেন্দ্র এভাবে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি নাজুক হয়ে পড়ে আছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন আগত পর্যটকরা। কুয়াকাটা মহাসড়ক সংযুক্ত বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু রোড হয়ে মিস্ত্রিপাড়া পর্যন্ত তিনটি মাধ্যমিক ও ৩টি প্রাইমারী স্কুল রয়েছে এই একটি মাত্র পাকা সড়ক দিয়ে ভোগান্তি পোহাতে পোহাতে চলাচল করতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
কুয়াকাটায় বিনোদন প্রেমিকরা যখন সমুদ্র গোসল করার পরে অন্য স্পট গুলো দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে তখন রওয়ানা দেয় বৌদ্ধবিহরের দিকে রাস্তায় যেতে যেতে অনিহা ও ভোগান্তির কথা জানান, ঢাকা নারায়নগঞ্জ থেকে আসা আহিয়ান জয় (২৫) এক সুন্দর একটি জায়গা শুধু রাস্তার কারণে অনেক পর্যটক আসছে না আমার খুব খারাপ লাগছে সড়কটি খুবই ভাঙা অনেক কষ্ট করে আসছি এই নিদর্শণ দেখতে পর্যটক হিসাবে বলতে চাই এই রাস্তাটা দ্রুত সংস্কার ও প্রসস্ত করা জরুরি।
অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পিংকি মজুমদার (৩৬) জানান, তারা ফ্যামিলিসহ বিদেশি জামাই নিয়ে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটায় আসেন। রাখাইন বৌদ্ধবিহারে নাম শুনে আসলাম আসতে যে কষ্ট হয়েছে পাজারো রেখে ভ্যানে আসলাম ভোগান্তির কথা আর কি বলব এখানে ভালো একটি দর্শণীয় স্থান তারপর রাখাইন মার্কেট ও পল্লী রয়েছে শুধুই যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয়।
মিস্ত্রীাপাড়ার বড় ব্যবসায়ী জসিম মুসুল্লী বলেন, কুয়াকাটার গুরুত্বপূর্ণ স্পট দেখে প্রায় ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছি কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু করোনার কারণে গত ২ বছর লস হওয়ায় এখন পর্যন্ত ঘুরে উঠে দাড়াতে পারি নাই। তারপর এখন রাস্তা খুব খারাপ একবার আসলে আর ট্যুরিস্ট আসে না। খুব খারাপ দিন যাচ্ছে।
স্থানীয় সমাজসেবক শফিকুর রহমান শফি বলেন, গত ৬ বছর হলো এই রাস্থার কার্পেটিং করছে স্থানীয় বিভাগ এখন এই রাস্তার এতটাই নাজুক তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। স্থানীরা ও চলতে পারছে না পর্যটক তো দূরের কথা।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট আ্যাসোসিয়েশন কুটুমের যুগ্ম-সম্পাদক জাকারীয়া জাহিদ বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা এখানে এসে বেশি ট্যুর করেন মিস্ত্রীপাড়া বৌদ্ধবিহারে প্রতিদিন শতশত পর্যটক আর শুক্র-শনিবার হাজার হাজার বলা চলে। কিন্ত গত ২ বছর ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অন্য দিকে এই সড়কটাকে প্রসস্ত করাও জরুরি। সরু রাস্তা হওয়ার কারণে ২টি মাইক্রোবাস ক্রোসিং করতে পারছে না। দ্রুত এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে চাই।
কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোহর আলী জানান, আমরা দেখেছি ওই রাস্তা ভেঙে গেছে যাতায়েত করতে খুবই সমস্যা হয়, তবে পিডি মহাদ্বয়ের কাছে আমরা একটি প্রোপজল পাঠিয়েছি, আশা করছি খুব দ্রুতই এ কাজটি শুরু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন