মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিড়ম্বনায় গ্রাহক, দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে

আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে একক লেনদেন খরচের সীমা ৩০০ ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ পত্রিকার বাংলাদেশের একজন গ্রাহকের সাবস্ক্রিপশন ফি এসেছে ৩৬৯ ডলার। কিন্তু কোনোভাবেই গ্রাহক তার এই বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। পত্রিকাটি থেকে একাধিকবার গ্রাহককে সাবস্ক্রিপশন ফি পরিশোধের আবেদন করলেও ওই গ্রাহক কোনোভাবেই এটি পরিশোধ করতে পারছেন না। পরিশোধের ক্ষেত্রে দেশীয় দ্য সিটি ব্যাংকের ওই গ্রাহক বার বার ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারাও বিল পরিশোধে সহায়তা করতে পারছে না। এক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন। শুধু ওই গ্রাহকই নয়; প্রতিদিনই এ রকম হাজার হাজার গ্রাহককে পণ্য বা বিভিন্ন সেবা ক্রয় করতে গিয়ে এ ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রাহকের সম্মানহানি হচ্ছে। এমনকি সঠিক সময়ে বিল প্রদান করতে না পারায় বাংলাদেশ সম্পর্কে ওই সব প্রতিষ্ঠানের ধারণাও বদলে যাচ্ছে।

২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দেয়া এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদেশে নামি ও নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে পণ্য এবং পরিষেবা (ডাউনলোডযোগ্য অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার, ই-বুকস ইত্যাদি) কেনা, পত্রিকা বা সংবাদপত্রের নিবন্ধন মাশুল ও অন্যান্য বৈধ পণ্য এবং পরিষেবার বিপরীতে আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে অনলাইনে এককালীন ৩০০ ডলার বা তার বেশি লেনদেন করা যাবে না। তবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সদস্যভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি বা সফটওয়্যার ফার্ম তাদের বিদেশি দেনার পুরোটা কার্ডে পরিশোধ করতে পারবে। এ ছাড়া কোনো দেশের ভিসা প্রক্রিয়াকরণ মাশুল, হোটেল বুকিং ও মোবাইল ফোনের রোমিং বিল যা হয়, তা পুরোটা দেয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে একজন বাংলাদেশি যে পরিমাণ খরচ করতে পারেন, কোনোভাবেই তার বেশি খরচ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে একবারে ৩০০ ডলারের বেশি খরচ করা যায় না, এ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই সময়ে নতুন এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশে বসে বিদেশি সেবা বা পণ্য কিনতে আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করে ৩০০ মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ পরিশোধ করা যাবে বলা হয়েছে। বিদেশ থেকে কোন কোন পণ্য বা সেবা কিনতে এ পরিমাণ অর্থ ব্যবহার করা যাবে, তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার কিছু সেবা ও পণ্যের মাশুল বাবদ কোনোভাবেই ৩০০ ডলারের বেশি খরচ করা যাবে না বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পত্রিকার ‘সাবস্ক্রিপশন ফি’ প্রদানে কোনোভাবেই একবারে ৩০০ ডলারের বেশি প্রদান করা যাবে না বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ওই পত্রিকাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও অধিকাংশ গ্রাহকের এ রকম সাবস্ক্রিপশন ফি ৩০০ ডলারের বেশি আসে, যা একটি পেমেন্টেই পরিশোধ করতে হয়। অন্যথায় বিল পরিশোধ করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নিয়মে অনেক গ্রাহকই বিপাকে আছেন। সঠিক সময়ে বিল পরিশোধ করতে না পারায় অনেক সময় সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ অনেক সেবাই জরুরি প্রয়োজনীয়।

সিটি ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মির্জা গোলাম ইয়াহিয়া ইনকিলাবকে বলেন, ব্যাংকের কিছুই করার নেই। একবারে ৩০০ ডলারের বেশি পেমেন্ট দিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটবে। এতে বড় অংকের জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে ব্যাংক। তাই কোনোভাবেই ৩০০ ডলারের বেশি একবারে পরিশোধ করার সুযোগ আমরা রাখি না। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে বিল পরিশোধের সুযোগ আছে, যা সময়সাপেক্ষ বলেও উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম ইনকিলাবকে বলেন, পণ্য বা সেবা ক্রয়ে যেহেতু একটিবার লাইন ৩০০ ডলার করা হয়েছে। তাই নতুন পলিসি না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ম থাকছে। তবে বিষয়টি ভেবে দেখার সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত জুলাই শেষে দেশে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক ছিল ২০ লাখ। গত জুলাইয়ে এসব কার্ডে লেনদেন হয়েছে ৪৪২ কোটি টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Kamrul Hasan Shawon ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৫ এএম says : 0
· পাসপোর্ট ছাড়া কি ডুয়েল কারেন্সি কার্ড পাওয়া যাবে না?
Total Reply(0)
Mahmuda Afrin Bithy ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৫ এএম says : 0
Thanks for this important information
Total Reply(0)
Hannan Sujan ১১ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৭ এএম says : 0
হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে সেগুলোর কিছু করতে পারে না। সাধারণ মানুষজনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কেনাকাটার ব্যবস্থাপনায় যত রকমের নিষেধাজ্ঞা। যতসব ফালতু।
Total Reply(0)
hassan ১১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:২৫ পিএম says : 0
লক্ষ্য হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে প্রতিদিন গুন্ডারা আমি গুন্ডারা প্রতিদিন বাংলাদেশ এমন কোন অঞ্চল নাই সেখানে থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে চলছে ঘুষ চলছে চলছে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয়না কেউ যদি সৎ কাজ করতে চায় টেন্ডারের মাধ্যমে সেটা করা সম্ভব হয় না ঘুষ দিতে হয় সেজন্য কাজ ভালো করা যায় না এক দিনের মধ্যেই রাস্তা ভেঙ্গে পড়ে যায় ব্রিজ ভেঙে পড়ে যায়
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন