দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেল স্টেশনের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ বন্ধ গত দশ মাস ধরে। পুরানো প্লাটফর্মের ওপর একচালা ছাপড়া ঘর তৈরি করে চলছে কার্যক্রম। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসুবিধের পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি।
এই স্টেশনে প্রতিদিন পাঁচটি ট্রেন আপ-ডাউন করে। ২টি আন্তনগর (তিস্তা ও ব্রক্ষপুত্র এক্সপ্রেস), দুইটি কমিউটার ও একটি লোকাল ট্রেন। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রী যাওয়া আসা করে। যাত্রী সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্টেশন বিল্ডিং পুণনির্মাণ, প্লাটফর্ম বর্ধিত ও উঁচুকরণ, এক্সেস কন্ট্রোল এবং প্লাটফর্ম শেড নির্মাণের কাজ ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি শুভ উদ্বোধন করেন। ১৯১২ সালে দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেল স্টেশন চালু হয়। সেই অবকাঠামো থেকে ১১০ বছর পর নতুন রুপ পেতে যাচ্ছে স্টেশনটি। পুরাতন ভবন ভেঙে প্লাটফর্ম বর্ধিত ও উচুঁ করার কাজ শুরু করার দুই মাস পর সমস্ত কাজ বন্ধ হয়। যা এখন দশ মাস ধরে বন্ধ আছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে নানা মুখী সমস্যা। প্লাটফর্মের ওপর ছাপড়া ঘর তৈরি করে স্টেশন মাস্টারের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এতে সমান্য বৃষ্টিতে পানি পড়ে। টিনের চালের নিচে পলিথিন বিছিয়ে রাখার পরও বৃষ্টির পানিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়েছে। সামান্য বাতাসে ঘরটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। যা সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ। গত এক মাস আগে বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়েছে যাত্রীদের উদ্দেশ্য ঘোষণা দেয়ার মাইক। এতে ট্রেনের বর্তমান অবস্থান জানতে সমস্যা হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়াও নষ্ট হয়েছে একাধিক বৈদ্যুতিক ফ্যান। এই উপজেলার পাশে বকশিগঞ্জ, গাইবন্ধা, রৌমারি, রাজিবপুরের লোকজন ঢাকা যাওয়া-আসা করার জন্য স্টেশনটি ব্যাবহার করে। ভাঙাগড়ার কাজের জন্য যাত্রা বিরতিতে ওয়েটিং রুমসহ প্লাটফর্মের উন্মুক্ত বসার বেঞ্চ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত যাত্রীরা। গাইবান্ধা থেকে আসা ঢাকাগামী বশির জানান, আমি ব্রক্ষপুত্র ট্রেন ধরার জন্য এসেছি। ঘাটে নৌকা দেরি হওয়ার কারণে ট্রেন ফেল করেছি। এখন তিস্তায় যাবো। আট ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। স্টেশনে বসার জায়গা নেই। বিভিন্ন টং দোকান, হোটেলে, চা-পান খেয়ে বসে থেকে সময় পাড় করছি।
স্টেশনের পুননির্মান কাজ বন্ধ থাকার ব্যাপারে উর্দ্ধতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. রেজাউল হক দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, প্রথমে একতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মানের টেন্ডার পাশ হয়। যার বাজেট ছিলো ২ কোটি ১৮ লাখ ২১ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ২তলা বিশিষ্ট আধুনিক বিল্ডিং তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এতে বাজেট বেশি লাগবে। নতুন বাজেটের অপেক্ষায় বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে। বাজেট পাশ হওয়ার পথে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।
স্টেশন মাস্টার মো. আব্দুল বাতেন বলেন, স্টেশন নির্মানাধীন কাজের জন্য যাত্রীদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা যাত্রীদের সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করছি। যাতে যাত্রী সহজ সুন্দর রেল সেবার মাধ্যমে ভোগান্তীহীন সেবা পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন