পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে হত্যার উদ্যেশ্যে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্ন করা ঘটনার মূল হোতা ভাড়াটে কিলার ইয়াসিনকে গ্রেফতার করেছে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। বুধবার দুপুরে মঠবাড়িয়া থানা হলরুমে পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার সাঈদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সোমবার ভোর রাতে ঢাকার লালবাগ থানার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তার নিকট থেকে ২টি দেশীয় অস্ত্র ও ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ইয়াছিনের স্বীকারোক্তি মতে উপজেলার বহেরাতলা খাল থেকে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ইয়াছিনকে আদারতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান জানান, ইয়াসিনসহ বাকি আসামিদের দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পুলিশ বাহিনী মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আসামিরা বারবার স্থান পরিবর্তন ও মোবাইলের সিমকার্ড পরিবর্তনের কারণে তাদের গ্রেফতারে একটু বিলম্ব হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, তাদের সকল ধূর্ততার অবসান ঘটিয়ে সকলকে অতি অল্প সময়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।
তিনি আরো বলেন, শফিকুলের সাথে মামলার ১নং আসামি নাসির হাওলাদারের টাকা-পয়সা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ও মামলা চলছিল। ওই টাকা শফিকুলের কাছ থেকে আদায় করতে না পেরে তাকে একপর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ইয়াছিনের সাথে দুই বছর ধরে পরিকল্পনা করে আসছিল। এ নিয়ে নাসির হাওলাদার ইয়াসিনকে বিভিন্ন কিস্তিতে আড়াই লাখ টাকা প্রদান করেন। শফিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইয়াছিন ৫ সদস্যের একটি দল গঠন করে। হামলার আগের দিন শফিকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে মঠবাড়িয়ার একটি ঘরে তারা অবস্থান নেয় ও মঠবাড়িয়া বাজার থেকে ইয়াসিন তার সহযোগীদের নিয়ে ৩টি ধারালো দা ক্রয় করে। হামলাপরবর্তী ওই দাগুলো বহেরাতলা নামক স্থানে খাল থেকে ইয়াসিনের জবানবন্দি অনুযায়ী থানা পুলিশ উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার সকালে (২৯ সেপ্টেম্বর) একটি মামলায় হাজিরা দিতে শফিকুল একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা সদরে আসার পথে মাঝেরপুল নামক স্থানে ৪/৫ জন সশস্ত্র অজ্ঞাত সন্ত্রাসী শফিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারি কোপাতে থাকে। কোপে তার বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ও পেটের নাড়ি-ভূড়ি বেরিয়ে যায়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শফিকুল ইসলামের মা মোছা. মমতাজ বেগম বাদি হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় ৭ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন পুলিশের হাতে আটক হওয়া মামলার প্রধান আসামি মো. নাসির হাওলাদারকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন