অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে ঘোষণা হল বগুড়া জেলা বিএনপির নির্বাচনের তারিখ ও
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নাম। তবে সামাজিক গণমাধ্যমে কমিটির তালিকা প্রকাশের পরপরই কমিটির এক সিনিয়র সদস্য
লিখিতভাবে ১জন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
পদত্যাগী ওই নেতার নাম ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল। তিনি সাড়ে তিন বছর আগে ঘোষিত বগুড়া বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। এছাড়া সদ্য গঠিত বগুড়া জেলা বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতেও তাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যেহেতু তিনি আসন্ন জেলা বিএনপির নির্বাচনে প্রার্থী হবেন সেকারণেই তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে থাকাকে অনৈতিক হবে বলে মনে করছেন।
দলীয় একাধিক সুত্রে জানাগেছে, বহু নাটকীয়তার পর এবং কেন্দ্রের চাপে শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ২ নভেম্বর বগুড়া জেলা বিএনপির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
গঠন করা হয়েছে ১৩ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। কমিটিতে চারজন সিনিয়র নেতাকে উপদেষ্টা মনোনিত করা হয়েছে। এরা হলেন, সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বর্তমান এমপি জিএম সিরাজ, সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম এবং বগুড়ার সাবেক পৌর মেয়র একেএম মাহবুবুর রহমান।
এছাড়াও এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে
এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক করা ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল এবং সদস্য সচিব করা হয়েছে মোশাররফ হোসেন এমপিকে।
সদস্য করা হয়েছে যথাক্রমে এ্যাডভোকেট হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, মীর শাহে আলম,
মোর্শেদ মিল্টন ও একেএম তৌহিদুল আলম
মামুনকে।
উল্লেখিত ১৩ জনের মধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষিত ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে উদ্দেশ্য করে লেখা এক পত্রে তার পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। পত্রটি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারও করেছেন।
এদিকে এই নির্বাচনের ভোটার তালিকা বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত প্রার্থীরা হাতে পাননি
বলে জানাগেছে। ভোটার তালিকা প্রকাশিত হলে অনেকেই প্রার্থী হবেন বলে জানাগেছে।
তবে ইতোমধ্যে বগুড়া জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক রেজাউল করিম বাদশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চান, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার
কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর তালুকদার হেনা এবং বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি
এম আর ইসলাম স্বাধীন তাদের প্রার্থীতার কথা
ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মাহিদুল ইসলাম গফুর, আব্দুল আজিজ হিরার প্রচারণা মুলক
কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন।
এদিকে বগুড়া জেলা বিএনপির আওতাধীন ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলো যেভাবে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক ও
সভাপতি প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশা ও তার
ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলী আজগর তালুকদার হেনা এবং হামিদুল হক হিরুর খেয়াল খুশিমত হয়েছে।
ঠিক একইভাবে বগুড়া জেলা বিএনপির আসন্ন জেলা সম্মেলন ও নির্বাচন ঠিক একইভাবে করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিনিয়র নেতা অভিযোগ ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির অধিনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা সম্মেলন,নির্বাচন এবং কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী,নির্যাতিত কর্মিদের গণহারে উপেক্ষা করা হয়েছে। অপরদিকে ধনী, সুবিধাবাদী,বড়ো ব্যবসায়ী এবং দু' নম্বরী পথে
অর্থ উপার্জনকারীদের ব্যপকভাবে প্রাধাণ্য দেওয়া হয়েছে।
এসব নিয়ে তারেক রহমান ও কেদ্রীয় নেতাদের দপ্তরে জমা পড়েছে অভিযোগের স্তুপ। স্থানীয়ভাবে হয়েছে মিছিল, প্রতিবাদ,ভাঙচুর,
প্রেস কনফারেন্স ইত্যাদি। এতে কোন প্রতিকার
না হওয়ায় ভুক্তভোগীদের ধারণা বগুড়া জেলা বিএনপির আসন্ন সম্মেলন ও নির্বাচনে অতীতের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন