ফেনীর পরশুরামে ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আলকা গ্রামে নিজ বাড়িতে মারধর করা হয়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা যান।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল মমিন (৬৫)। তিনি উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব আলকা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এ ঘটনায় আবদুল মমিনের মেয়ে পানু আক্তার বাদী হয়ে রাতেই পরশুরাম মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ আবদুল মমিনের ছেলে মো. ফারুক ওরফে রাজিব (৩৫) ও তাঁর শ্যালক আবদুল মজিব ওরফে সুমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবদুল মমিনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। আবদুল মমিন ও তাঁর স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। আবদুল মমিনের ছেলে ফারুক তাঁর স্ত্রী–সন্তান নিয়ে উপজেলা সদরে বাসাভাড়া নিয়ে থাকতেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফারুক ও তাঁর শ্যালক আবদুল মজিব গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় আবদুল মমিন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাড়িতে আসার পর থেকেই ফারুক ও তাঁর বাবার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। ফারুকের দাবি, আবদুল মমিন তাঁর স্ত্রীকে নির্যাতন করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলার একপর্যায়ে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুল মমিনের মাথায় লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারতে থাকেন। এতে আবদুল মমিন গুরুতর আহত হলে ফারুক তাঁর শ্যালককে নিয়ে পালিয়ে যান।
পরে আবদুল মমিন ও তাঁর স্ত্রীর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আবদুল মমিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টায় আবদুল মমিন মারা যান।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফারুক তাঁর বাবাকে মারধরের ঘটনাটি ডাকাত দলের হামলা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তবে এ ঘটনায় রাতেই পরশুরাম মডেল থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফারুক ও আবদুল মজিবকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আজ শুক্রবার ফেনীর আদালতে পাঠানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন