শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কুন্ডেরবাজার বেইলিব্রিজে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ

পদ্মা সেতু ও শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর সংযোগ সড়ক

মঞ্জুর মোর্শেদ, মুন্সীগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মুন্সীগঞ্জ-সিরাজদিখান-ঢাকা সড়কের গৌরগঞ্জ খালের ওপর কুন্ডেরবাজার বেইলিব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মুন্সীগঞ্জ-টঙ্গীবাড়ি-ঢাকা সড়কে যাত্রীবাহী বাসসহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এ সড়কে জেলার তিন উপজেলার যাত্রীদের ঢাকায় যাতায়াতে এবং মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জেলা সদরের সাথে উত্তরাঞ্চল সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলার এবং রাজধানী ঢাকার সাথে সড়কপথে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ কুন্ডেরবাজার বেইলিব্রিজটি দীর্ঘ পঁচিশ বছরেও পুনঃনির্মিত হয়নি। বর্তমানে ১০০ মিটার দীর্ঘ বেইলিব্রিজটিতে যানবাহন ওয়ানওয়ে চলাচল করতে হয়। সম্প্রতি কার্গোর ধাক্কায় বেইলিব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতে মুন্সীগঞ্জের সাথে ঢাকার সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এক লেনের বেইলিব্রিজটি ভেঙে চার লেনের গার্ডার সেতু এবং মুক্তারপুর-বেতকা-ছনবাড়ি সড়ক চার লেনে উন্নীত করলে পদ্মাসেতু ও ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের সুফল আসবে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতসহ পণ্য পরিবহনে নতুন দিগন্তের উম্মোচন হবে।

মুন্সীগঞ্জ টঙ্গীবাড়ি এবং সিরাজদিখান থেকে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য প্রধান সংযোগ সড়ক মুন্সীগঞ্জ-বেতকা-নিমতলী সড়ক। মুন্সীগঞ্জ এবং টংগীবাড়ী উপজেলার যাত্রীরা নিমতলী হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে খুব সহজে ঢাকায় যেতে পারে। মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়কে যানজট এখন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। এ সড়কে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পরে থাকতে হয়। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ যাত্রীরা যানজট এড়িয়ে ঢাকায় যেতে মুন্সীগঞ্জ-বেতকা-নিমতলী সংযোগ সড়কে যাতায়াত করে। তাছাড়া শ্রীনগর এবং সিরাজদিখান উপজেলাবাসীকে কুন্ডেরবাজার বেইলিব্রিজ দিয়ে বেতকা হয়ে জেলা সদরে আসতে হয়। বেইলিব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীবাহী বাস সরাসরি চলাচল করতে পারছে না।

ঢাকাগামী বাসযাত্রী জাকিউর রহমান জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে দীর্ঘ ২৫ বছর পূর্বে নির্মিত ওয়ানওয়ে বেইলিব্রিজটি ভেঙে নতুনভাবে চার লেনের সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাজাধনীর নিকটবর্তী জেলা সদর হলেও আমাদের ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জে আসতে ভোগান্তীর শেষ নেই। নারায়নগঞ্জ হয়ে আসতে পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর পর্যন্ত সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পরে থাকতে হয়। আবার নিমতলী হয়ে আসতে কুন্ডেরবাজারব্রিজ পার হতে গাড়ি লাইনে থাকতে হয়। সিরাজদিখান এবং শ্রীনগর দুই উপজেলাবাসীকে জেলা সদরে এবং ঐ এলাকার ছাত্র/ছাত্রীদের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে যাতায়াতে নানান দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু চালু হওয়ায় কুন্ডের বাজারব্রিজটির গুরুত্ব আরো বেড়ে গিয়েছে। পদ্মা সেতু এবং ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর সুফল পেতে বর্তমান কুন্ডেরবাজার বেইলিব্রিজটি ভেঙে ছয় লেনের নতুনব্রিজ নির্মাণ জরুরি।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খাঁন জানান, সেতু বিভাগের নকশা শাখা কুন্ডেরবাজারে নতুন সেতু নির্মাণে নকশা তৈরি করছে। একশ’ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি হবে দুই লেনে। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত আগামীদিনের গুরুত্ব বিবেচনায় সেতুটি চার লেনের করা প্রয়োজন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর ফলে চট্টগ্রাম থেকে যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে মদনপুর দিয়ে নবনির্মিত তৃতীয় শীতলক্ষ্যা এবং মুক্তারপুর সেতু হয়ে শ্রীনগরের ছনবাড়ী দিয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের একুশ জেলায় যাতায়াত করতে পারছে। উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চল সংযোগ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যানবাহন কুন্ডেরবাজার ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বেতকা-তেঘড়িয়া সড়কটি চার লেনে করার একটি পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। এ সড়কটি মুন্সীগঞ্জ-ছনবাড়ী সড়কের সাথে সংযোগ হলে ঢাকার সাথে মুন্সীগঞ্জের একটি বৃত্তাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হবে। পদ্মা সেতু এবং তৃতীয় শীতলক্ষা সেতুর সুফল পেতে মুক্তারপুর থেকে বেতকা হয়ে শ্রীনগরের ছনবাড়ী পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা প্রয়োজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন