বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ব্যতিক্রমী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দ্রুত এসে দ্রুত চলে যায়

দুর্বল স্থল লঘুচাপ আকারে কেটে গেছে নেত্রকোনা-সুনামগঞ্জ-মেঘালয়ে :: বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। থাইল্যান্ডের দেয়া নাম। এটি আগাগোড়া ছিল ব্যতিক্রমী আচরণের এক ঘূর্ণিঝড়। আন্দামান সাগর ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি, পরবর্তীতে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয় অতি দ্রুত সময়ে। প্রথম দিকে ভারতের অন্ধ্র-উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সুন্দরবনের দিকে (উত্তর-পশ্চিমে) ছিল গতিমুখ। পরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে গতিমুখ বজায় রেখেই ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ সরাসরি বাংলাদেশ উপকূল বরাবর ধাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ সুপার সাইক্লোন কিংবা প্রবল শক্তিশালী রূপ নিতে পারে এমনটি আশঙ্কার কথা দেশি-বিদেশি আবহাওয়া সংস্থা ও বিশেষজ্ঞগণ আশঙ্কা ব্যক্ত করেছিলেন।

অবশেষে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় আকারে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার চেয়ে উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের ব্যাপকতাই ছিল বেশি। অমাবস্যার প্রভাব এর প্রধান কারণ। ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বঙ্গোপসাগর থেকে বেশ দ্রুত সময়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসে। আবার দ্রুত চলেও যায়। ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে সোমবার রাতেই ঢাকা-কুমিল্লা অঞ্চল দিয়ে অগ্রসর হতে হতে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার অবশেষে আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল স্থল নিম্নচাপ, স্থল সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও দুর্বল স্থল লঘুচাপ আকারে কেটে গেছে নেত্রকোণা-সুনামগঞ্জ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ের দিকে। এটি ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে কেটে গেছে।

গতকাল সর্বশেষ আবহাওয়া সতর্কবার্তায় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উপকূল উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অতি দ্রুত অগ্রসর হয়ে সোমবার মধ্যরাতে ভোলার পাশ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে। তখন বৃষ্টি ঝরিয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এরপর স্থল নিম্নচাপ আকারে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মনবাড়িয়া ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থানকালে স্থল নিম্নচাপটি আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমেই দুর্বল স্থল সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এরপর আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে নেত্রকোণা ও মেঘালয়ের দিকে দুর্বল স্থল লঘুচাপ আকারে কেটে গেছে।

এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, মোংলা, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের চেয়ে স্থানভেদে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন