নাটোরের লালপুর উপজেলার জোতদৈবকী ও বুধপাড়া গ্রামের ৭ হাজার মানুষ পাবে নিরাপদ ও আয়রনমুক্ত সুপেয় পানি। দীর্ঘদিন থেকে এই এলাকার ৯০ ভাগ বাসিন্দা মাত্রাতিরিক্ত আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করে আসছে। এতে এই এলাকার মানুষেরা যেমন বিভিন্ন রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে, তেমনি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের মূল্যবান সামগ্রী। এবার উপজেলার জোতদৈবকী ও বুধপাড়া গ্রামের ৭ হাজার মানুষের নিরাপদ আয়রনমুুক্ত পানি সরবরাহ করতে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। জোতদৈবকী গ্রামে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সয়েল্ট টেস্ট সম্পন্ন করে এবং টেস্ট টিউবয়েলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে আর্সেনিক, আয়রন, ক্লোরাইড পানির গুনগতমান পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রুরাল পাইপড ওয়াটার সাúøাই স্কীম প্রজেক্টের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন। এই পাইপ লাইনের মাধ্যমে এই গ্রামের প্রতিটি পরিবারে পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিন আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, নিরাপদ ও আয়রনমুক্ত সুপেয় পানি সরবারহ করতে ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা অধিক ব্যায়ে রুরাল পাইপড ওয়াটার সাúøাই স্কীম প্রজেক্টের আওতায় উপজেলার জোতদৈবকী ও বুধপাড়া গ্রামের ১ লক্ষ লিটার ট্যাংকিসহ তিন কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। যেখানে দুইটা প্রডাকশন টিউবয়েল দ্বারা পানি উত্তেলন করা হবে। প্লান্টের কাজ এখনো সমাপ্ত হয়নি। লাইনের কাজ শেষ হলে জোতদৈবকী গ্রামের এই প্লান্ট থেকে ঘন্টায় ৩ লাখ লিটার নিরাপদ পানি উত্তোলন করে সকাল বিকাল দুই গ্রামের ৭ হাজার মানুষের বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। তিনি আরো জানান, আগামী ২৩ সালের জুন মাসের দিকে জোতদৈবকী গ্রামের ৭ হাজার মানুষের পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে এবং এ গ্রামকে নিরাপদ পানির আওতায় আনা হবে। ২ বছর এই পাম্পে এর মেরামতের খরচ বহন করা হবে পাশাপাশি পাম্প চালকের ১৮ মাস বেতন প্রদান করা হবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
জোতদৈবকী গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সুপেয় ও নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিলো এই গ্রামে। আমরা দীর্ঘদিন থেকে আয়রন যুক্ত পানি পান করে আসছি। এখন পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হলে আমরা বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্তি পাবো। আমাদের জীবন যাপন অনেক সহজ হয়ে যাবে।
বুধপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাবিলা ও রানা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রথমেই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের নিরাপদ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার জন্য। নিরাপদ পানির অভাবে আমাদের এলাকায় প্রতিনিয়োত পানি-বাহিত রোগ ব্যাধি লেগেই থাকত। নষ্ট হয়ে যেতো মূল্যবান সামগ্রী। এ আয়রন মুক্ত সুপেয় পানি পান করে আমরা পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে এখন সুস্থভাবে বাঁচতে পারবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন