ময়মনসিংহ ও খুলনার মতো রংপুর মহাসমাবেশ ঘিরেও বন্ধ থাকবে গণপরিবহন- বিএনপি নেতাকর্মীদের সেই আশঙ্কাই সত্য হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে রংপুরের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ। এতে কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ওই বিভাগের আট জেলা। তবে যথারীতি চলছে ট্রেন। ছোট ও ব্যক্তিগত যানবাহন এবং রেল সুবিধায় সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবার দুপুর ২টায় শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে বিএনপির গণসমাবেশ শুরু হবে। শেষ সময়ের বাধা এড়াতে অনেকেই তিন-চার দিন ধরে রংপুর শহরের আবাসিক হোটেল ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছেন। চিড়া-মুড়িসহ শুকনো খাবার নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
জানা গেছে, বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে ট্রেন, মোটরসাইকেল, সাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ, রিকশা, অটোরিকশা ও গরুর গাড়িতে আশপাশের জেলাগুলো থেকে রংপুরের পথে রওনা হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ আসছেন মাইলের পর মাইল হেঁটে। শুক্রবার রাত ও শনিবার ভোরের মধ্যেই তারা সমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন।
সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের কুড়িগ্রাম-রংপুর ও দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির। এ ছাড়া তৃণমূলের কর্মীদের ফোনে হুমকি-ধমকি, রংপুর নগরীর নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো, নগরীর ছাত্রাবাস ও হোটেলে তল্লাশি চালানোর অভিযোগও করেছে দলটি।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে গণসমাবেশ সফল করতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ৫ লাখ মানুষের জমায়েতের মধ্য দিয়ে সফল করা হবে ঐতিহাসিক এই কর্মসূচি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় নেতাকর্মীকে হত্যার প্রতিবাদ, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় দলটির সমাবেশ সফল হয়েছে বলে আলোচনা রাজনৈতিক মহলে। রংপুর মহাসমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। সমাবেশ ঘিরে রংপুর নগরীসহ বিভাগের সব জেলা-উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড-গ্রাম পর্যন্ত বিএনপির পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিগত কয়েকটি কর্মসূচির মতো রংপুরেও খালেদা জিয়ার জন্য সংরক্ষিত থাকবে একটি চেয়ার।
কর্মসূচির সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু কালবেলাকে বলেন, ‘সরকার সমাবেশ ঠেকাতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। পরিবহন ধর্মঘটের নামে দেশের সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কোনো বাধাই সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। মানুষ যে যেভাবে পারছেন সমাবেশে আসছেন। রাতের মধ্যেই পুরো মাঠ ভরে যাবে। দেশের মানুষ তাদের দাবি আদায়ের জন্য এই সমাবেশে যোগ দেবেন।
কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা শুধু ২৯ অক্টোবর সমাবেশ করতে চেয়েছি। তবে সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় এখন আমাদের সমাবেশ দুদিন হচ্ছে। আজ (শুক্রবার) থেকেই সমাবেশ শুরু হয়ে গেছে। মানুষ দল বেঁধে আসছেন, আরও আসবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন