কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলাটির উত্তর ও উত্তর পশ্চিমে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে দেবিদ্বার উপজেলা, দক্ষিণ পশ্চিমে চান্দিনা, দক্ষিণে ও দক্ষিণ পূর্বে কুমিল্লা আদর্শ সদর, পূর্বে ও উত্তর পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত। এর আয়তন ১৬৩.৭৬ বর্গ কিলোমিটার বা ৬৩.২৩ বর্গমাইল। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর রেল স্টেশনটি বেশ জনপ্রিয় স্টেশন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে এবং এটি রাজাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।
উপজেলা ভিত্তিক হিসেবে করলে বুড়িচং উপজেলার একমাত্র রেল স্টেশন হচ্ছে এ রাজাপুর স্টেশনটি। রাজাপুর স্টেশনের উত্তরে শশীদল ও দক্ষিণে সদর রসুলপুর (সাবেক ফকিরহাট) ও কুমিল্লা রেল স্টেশন অবস্থিত। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর এ রেল স্টেশনটি অনেকটা সীমান্তবর্তী প্রায় ৫ কি.মি. সীমানায় অবস্থিত হলে ও উক্ত রেল স্টেশনের এ সীমানায় ৮টি অরক্ষিত বিভিন্ন রেল ক্রসিং রয়েছে। যেগুলো দিয়ে দেদারসে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। অরক্ষিত থাকার ফলে সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি পারাপারের সময় বিভিন্ন সময়ে অনেক দুর্ঘটনা ও সংঘটিত হয়ে আসছে। রেল আসার সংকেত না পেয়ে এ সমস্ত সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি পারাপার হতে গিয়ে হঠাৎ আটকে গিয়ে দ্রুত গতিতে আসা ট্রেনের ধাক্কায় যান ও যাত্রী সাধারণ উভয় পিষ্ট হওয়ার খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। ৫ কিলোমিটারে ৮টি অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলো হলো-লড়িবাগ উত্তরপাড়া চড়ানল ধারেশ^র রুট, সিন্দুরিয়া ব্রিজ লড়িবাগ বারেশ^র রুট, রাজাপুর স্টেশনের উত্তর পাশে শংকুচাইল-রাজাপুর রুট, পাইকোট-রাজাপুর রুট, কালিকাপুর-বাকশীমূল পূর্ব রুট, মাশরা-বাকশীমুল পূর্ব রুট, মাধবপুর-বাকশীমুল পূর্ব পাড়া রুট, পিতাম্বর-কাঞ্চণপুর ফকিরবাজার রুট।
এছাড়া, পশ্চিম আজ্ঞাপুর ও পুর্ব খুদাইধুলী দিয়ে আংশিক একটি রুট রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যান চলাচল করে সিন্দুরিয়া ব্রিজ লড়িবাগ বারেশ^র রুট, রাজাপুর স্টেশনের উত্তর পাশে শংকুচাইল-রাজাপুর রুট, পাইকোট-রাজাপুর রুট, কালিকাপুর-বাকশীমূল পূর্ব রুট ও পিতাম্বর-কাঞ্চণপুর ফকিরবাজার রুট দিয়ে প্রতিদিন হাজার লোক ও যানবাহন এসব রুট দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় সরকার কর্তৃক রাজাপুর রেল স্টেশনের উন্নয়ন ও রেলকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এক সময়ে রেল স্টেশনগুলো খুব জাঁকজমকপূর্ণ ছিলো। তখন যাত্রীদের একমাত্র বাহন ছিল রেল ও নৌকা। ১৯৯৬ এরপর থেকে পাশর্^বর্তী সড়ক পরিবহনের উন্নয়ন হওয়ায় রেলে চলাচলের মাত্রা একটু কমতে থাকে। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুরসহ আশপাশের শংকুচাইল, লড়িবাগ, বারেশ^র, পূর্ণমতি, পাঁচোড়া, চড়ানল, পাইকোটা, দক্ষিণগ্রাম, উত্তরগ্রাম, ঘিলাতলা, জরইন, যদুপুর, আজ্ঞাপুর ও খুদাইধুলী এলাকার হাজার হাজার জনগণ এ রাজাপুর রেল স্টেশন দিয়ে চলাচল করতো। কালের কালক্রমে বাস ও সিএনজি চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণএখন রেল তথা ট্রেনের জন্য আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না। যাত্রীরা বাস ও সিএনজি দিয়ে নিকটবর্তী কুমিল্লা হয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াত কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসছে। অতি সম্প্রতি সরকার রেলকে আরো আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে রেলের সকল রেল স্টেশনগুলোকে আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ফলে এতদ অঞ্চলের জনগণের আবার রেলে চলাচলের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি সরকার ও তার মিশন ভিশন বাস্তবায়নে রেল স্টেশনের মেগা প্রকল্প উন্নয়নের কাজ অত্যন্ত সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তদুপরি রেলের ভ্রমনকে আরো নিরাপদ মনমুগ্ধকর করে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টজনেরা শুধু বুড়িচং উপজেলা নয় সারা দেশের অরক্ষিত সকল রেল ক্রসিংগুলোতে পাহারাদার নিয়োগ তথা জনবল নিয়োগ দিয়ে একটি নিরাপত্তা বলয়ে আনা দরকার বলে মনে করছে। এ বিষয়ে যথাযথ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসা দরকার। তবেই দুর্ঘটনার আসন্ন কবল থেকে রক্ষা পারে এমনতরই আশা করছে জনগণ।
এ প্রসঙ্গে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার হালিমা খাতুন জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন