আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌর নির্বাচন। এটি ফটিকছড়ি পৌরসভার তৃতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৫ বর্গকিলোমিটারের পৌর এলাকাজুড়ে চলছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। পোস্টার-ব্যানারে চেয়ে গেছে হাট-বাজার, অলি-গলি, বাড়ি-ঘরসহ সর্বত্র। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পদচারণায় মূখরিত হয়ে উঠেছে পুরো জনপদ। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে দিনে ঘরে ঘরে গণসংযোগ; রাতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পথসভা করে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় সমান্তরালে ভোট প্রার্থনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত খ শ্রেণির এ পৌরসভার ৩৬ হাজার ২৪৬ ভোটার বুধবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত একটানা ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে তাদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন; যারা পরবর্তী ৫ বছর তাদের নাগরিক সেবা-উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ৩জন। তারা হচ্ছেন; আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ইসমাঈল হোসেন (নৌকা), আ.লীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এএসএম মিনহাজুল ইসলাম (মোবাইল ফোন), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনোয়ার পাশা চৌধুরী (নারিকেল গাছ)।
এছাড়া সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে সেলিনা আকতার বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় হেট্রিক কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪জন, ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২জন এবং সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে ৩জন, ২নং ওয়ার্ডে ২জন, ৩নং ওয়ার্ডে ২জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৬জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৩জন, ৬নং ওয়ার্ডে জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৩জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৯নং ওয়ার্ডে ৫ জন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, মেয়র পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্ধি হলেও মূলত: নৌকা ও মোবাইল প্রতীকের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এর নেপথ্যে ২ বারের চৌকস মেয়র ইসমাঈল জনপ্রিয় হলেও পৌর এলাকার বেশিরভাগ ভোটার নৌকা বিরোধী। গেল আগস্টে বিএনপি ফটিকছড়িতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালন করতে না পারার নিকটবর্তী ক্ষোভটা মেয়র নির্বাচনে পড়ছে বলে শুনা যাচ্ছে। তাই বিএনপির ৫ নেতার গ্রুপ একাট্টা হয়ে নৌকা ঠেকাতে জনগণকে নেপথ্যে উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে- এখানে প্রথম বারের মতো ইভিএম এবং সিটিটিভি বসানোতে ভোটারদের মাঝেও ব্যাপক আগ্রহ জমেছে। আর সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রথম মেয়র নির্বাচনে পিতার পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে নবীন বিদ্রোহী প্রার্থী মিনহাজুল ইসলাম নৌকার বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছে বলে ধারণা করছে সাধারণ ভোটারগণ।
নৌকার প্রার্থী মো. ইসমাঈল হোসেন বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে পৌর এলাকার মসজিদ-মন্দির, মাদরাসা, স্কুল-কলেজসহ সামাজিক নিরাপত্তায় পৌরবাসীর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করেছি; আমার দৃঢ় বিশ^াস দল-মতের উর্ধ্বে উঠে ভোটারেরা আমাকে আবারো নির্বাচিত করবেন।
বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এএসএম মিনহাজুল ইসলাম বলেন, কিশোরগ্যাং; ইয়াবাসহ মাদকমুক্ত শিক্ষাঙ্গন, সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা পূরণে ভোটারগণ জনবান্ধব নেতৃত্ব চায়। আশাকরি- নতুন নেতৃত্বই বেচে নেবে ভোটারগণ। আমি নির্বাচিত হলে পৌর এলাকার মাস্টার প্ল্যান তৈরিসহ সাবিক উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবো।
রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ কামরুল আলম জানান, ফটিকছড়ি পৌর নির্বাচনে ১৯টি ভোট কেন্দ্রের ১৪টি অস্থায়ীসহ ১০৩টি বুথে ইভিএম মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি বুথে সিসিটিভি বসানো হচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রের বাইরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণেও সিসিটিভি বসানো হচ্ছে। এগুলো অনলাইনে নির্বাচন কমিশন থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতি ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুরো পৌর এলাকায় কমিশন কর্তৃক নিয়োজিত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। থাকছে দু’প্লাটুন বিজিবি; র্যাব থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে। প্রয়োজনবোধে বিজিবি আরো বাড়ানো হবে। কেন্দ্রের বাইরে কোন গোলযোগ বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গেই এ্যাকশানে যাবে প্রশাসন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন