বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

কর আদায়ের সক্ষমতা বাড়াতে হবে

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে কর জিডিপির হার বৈশ্বিক সূচকে তলানিতে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যেও নি¤œ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০১৬-২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে কর জিডিপির গড় হার ৯.৯০%। আইএমএফের প্রতিবেদন-২০২১ মতে, ২০২০ সালে কর জিডিপির হারের ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৮৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৬৫তম। এ তালিকায় কর জিডিপির হার ফ্রান্সের ৪৬.২%, ভারতের ১৯.৬৭%, নেপালের ২১.৫০%, পাকিস্তানের ১৪.৮৮%, শ্রীলঙ্কার ১২.৭৪%, উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর গড় ২৪.৭২% এবং উন্নত দেশগুলোর গড় ৩৫.৮১%। ২০২১ সালে বাংলাদেশের কর জিডিপির হার তেমন বেড়েছে বলে মনে হয় না। আইএমএফ’র উক্ত তথ্য নিয়ে এ পর্যন্ত বিশ্বের কেউই সমালোচনা করেনি। বাংলাদেশ থেকেও নয়। কারণ, জাতিসংঘ ও তার প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রায় সব তথ্যই নির্ভুল হয়। তবে, পূর্বাভাসে কিছু কমবেশি হয়। তাই জাতিসংঘ ও তার সংস্থাগুলোর তথ্যের রেফারেন্স দেয় বিশ্বের সকলেই। আইএমএফের বর্ণিত তথ্যানুসারে, বাংলাদেশের কর জিডিপির হার বৈশ্বিক সূচকের নি¤েœ। নেপালেরও চেয়ে কম। তাহলে কি নেপাল বাংলাদেশের চেয়ে ধনী দেশ? না, তা নয়। বিশ্বব্যাংক নেপাল ও বাংলাদেশকে একই সাথে নি¤œমধ্য আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে কয়েক বছর আগে। উপরন্তু নেপালের জাতীয় আয়ের প্রধান ভিত্তি পর্যটন আয়। আর বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের প্রধান ভিত্তি বহুধা ও মজবুত। তাই ওয়েলথ এক্স’-এর প্রতিবেদন মতে, ২০১২-২০১৭ পর্যন্ত অতি ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিচারে বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওই পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদের মালিক অতি ধনীর সংখ্যা গড় বৃদ্ধির হার ১৭.৩%। এছাড়া, ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বিপুল এবং তা বেড়েই চলেছে করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক মহামন্দার সময়েও, যার প্রমাণ বাংলাদেশ ব্যাংকের সা¤প্রতিক রিপোর্ট। অপরদিকে, দেশের রাজস্ব আয় আদায়ের জন্য রয়েছে অনেক আইন, প্রয়োজনীয় সরকারি দপ্তর ও তার জনবল এবং ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি।

বাংলাদেশের কর আদায়ের ক্ষেত্রে টিডিএস সিস্টেম চালু করা হয়েছে ৬ অক্টোবর, ২০২১। ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ইএফডির চালু করা হয়েছে ২৫ আগস্ট, ২০১৯। তখন ব্যবসায়ীদের বিনা মূল্যে এক লাখ ইএফডি মেশিন দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, কিছু বড় প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব উদ্যোগে পিওএস মেশিন বসানো আছে। এনবিআর সদস্য মইনুল খান ৬ অক্টোবর, ২০২১ বলেন, ‘ইএফডি মেশিনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৭,৮৩২টি ইএফডি ও এসডিসি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এই সেক্টরে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। যখন তিন লাখ মেশিন বসানো হবে, তখন দীর্ঘমেয়াদী আরও সফলতা আসবে’। ইএফডি মেশিন সরবরাহ, স্থাপন ও দেখভাল করে আসছিল এনবিআর। হঠাৎ করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান গত ৫ জানুয়ারি বলেন, ‘ভ্যাট সংগ্রহে দোকানে ইএফডি বসানো, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ আউটসোর্সিং ব্যবস্থায় হবে’। দেশে বর্তমানে আড়াই লাখের বেশি দোকানের ভ্যাট নিবন্ধন আছে। ২৪ ধরনের ব্যবসায়ে যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৫ কোটি টাকার বেশি, তাদের ইএফডিতে হিসাব রাখা বাধ্যতামূলক। তাই ভ্যাট নিবন্ধিত দোকানের অধিকাংশেরই ইএফডি রাখতে হবে। কিন্তু এনবিআরের ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ২০২১ সালের মে-জুলাই জরিপ চালিয়ে জানিয়েছে, ‘ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেও সরকারি কোষাগারে একটি টাকাও জমা দেয় না প্রায় ৮৮% দোকান। এরা ভ্যাট নিবন্ধনই করেনি। ভ্যাট প্রদানকারী ১২ শতাংশের ৮০ শতাংশই হিসাবের চেয়ে কম জমা দেয়। আদায়কৃত ভ্যাটের প্রায় ৬০% দেশের বড় ১৫৭টি প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করে। রাজধানীর চেয়ে বাইরের দোকান মালিকদের ভ্যাট প্রদানে অনীহা বেশি’। এরপর এক বছরের অধিক হয়েছে।কিন্তু তবুও বর্ণিত অবস্থার সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। যেমন: এখন পর্যন্ত আট হাজার দোকানে ইএফডি বসেছে। আরও তিন লাখ বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে স¤প্রতি জানিয়েছে এনবিআর। অথচ বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নিবন্ধিত দোকানের সংখ্যা ৩০ লাখ। অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর ২০২১ সালের আগস্টে বলেন, শহরের সব দোকান মালিকদের যদি ভ্যাট নিবন্ধন নিশ্চিত করে ইএফডি দেয়া হতো, তাহলে এক লাখ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হতো। আর গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ইএফডি দেয়া হলে বছরে ৫ লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হবে। অপরদিকে, কর সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা ও তার আর্থিক সংশ্লিষ্টতার পরিমাণ বিপুল।কিন্তু এ দেশের অধিকাংশ মামলার রায় সহজে হয় না!

গত ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ইটিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন ফরম ও সম্পদের হিসাব এখন অনলাইনে পূরণ করা যায়। আয়কর পরিশোধ ও রিটার্নও জমা দেওয়া যায় ডিজিট্যাক্স অ্যাপে, যা চালু করা হয়েছে ২৩ অক্টোবর, ২০২১। তবুও বর্তমানে নিবন্ধিত ই-টিআইএন সংখ্যা মাত্র ৭৯ লাখ, যার দুই তৃতীয়াংশই রিটার্ন দাখিল করে না। যেমন: গত ২০২১-২২ করবর্ষে রিটার্ন দাখিল হয়েছে ২৪,৯৭,৩১৫। তন্মধ্যে ব্যক্তি ২৪ লাখ ৮৬০ ও কোম্পানি ২৯,৭৮৫টি। অবশ্য, গত এপ্রিল পর্যন্ত নথিস্থ মামলার সংখ্যা ছিল ২৭,০৬,৪০৭টি। এগুলো ও বাকিগুলোর রিটার্ন দাখিল করে না। তন্মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন ও বিদেশ গেছেন। কিন্তু এসব তালিকা থেকে বাদ ও কর ফাইল বাতিল হয়নি। দেশে কয়েক লাখ বিদেশি লোক কর্মরত আছে, তারা কর দেয় না ঠিক মতো। এদের কোনো পরিসংখ্যানও নেই। উপরন্তু বেসকরকারি খাতের অনেক করযোগ্য কর্মচারীও কর দেয় না। উল্লেখ্য যে, ইনকাম ট্যাক্স প্রদানকারীদের বিরাট অংশ সরকারি কর্মচারী। তারা ই-টিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিল করতে বাধ্য হয়। নতুবা চাকরিতে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তাই ই-টিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। নচেৎ আরো অনেক কম হতো! বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বর্তমানে দেশে ব্যক্তি করযোগ্য মানুষের সংখ্যা ১.৫ কোটির অধিক হবে।

কাক্সিক্ষত পর্যায়ের রাজস্ব আয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আইন, জনবল, প্রযুক্তি, কর/ভ্যাট দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি রয়েছে। দেশে ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস পালিত হচ্ছে বহুদিন থেকে। ২০১০ সাল থেকে আয়কর মেলা হয় দেশব্যাপী (করোনার কারণে ২-৩ বছর বন্ধ আছে। এ বছর আয়কর সেবা মাস পালিত হচ্ছে চলতি নভেম্বর মাসে)। চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ৩৮টি সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের স্বীকার প্রাপ্তি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, নতুন করদাতা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য বিনিময় করতে এনবিআর ও ডিপিডিসির মধ্যে চুক্তি হয়েছে স¤প্রতি। তবুও কর আদায়ের হার নগন্য! এ দায় এনবিআরের লোকদের। তাদের অনেকের দুর্নীতি, গাফিলতি, অবহেলা, সিদ্ধান্তহীনতা ইত্যাদিই এ জন্য দায়ী। নতুন কাস্টমস আইনের খসড়া তৈরি শুরু হয় ২০১২ সালে এবং আয়কর আইন হয় ২০১৭ সালে। এতোদিনেও এসব বাস্তবায়ন হয়নি! সর্বোপরি বারবার কর রেয়াতও দেওয়া হয় বিপুল।

রাজস্ব আয় আশানুরূপ না হওয়ায় বাজেট বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন কর্ম করার জন্য দাতাদের ও অভ্যন্তরীণভাবে বিপুল ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে সরকারের। খবরে প্রকাশ, গত জুন পর্যন্ত বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৬ বিলিয়ন ডলার, যার প্রায় ৭৩% সরকারের ও ২৭% বেসরকারি। এছাড়া, অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি। তাই সব মিলে বর্তমানে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে জিডিপির প্রায় অর্ধেক, যা পরিশোধ করতে হয় দেশবাসীকে। বর্তমানে ঋণের মাথাপিছু গড় পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। উপরন্তু সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তাই দেশবাসীর মাথাপিছু গড় ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।সে সাথে সরকারেরও ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়ছে। খবরে প্রকাশ, ২০২১ সালে সুদসহ বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১১.৭ বিলিয়ন ডলার, যা বেড়ে ২০২২ সালে হবে ২৩.৪ বিলিয়ন ডলার। তন্মধ্যে বেসরকারি খাতের প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার ও সরকারের ৫ বিলিয়ন ডলার। অভ্যন্তরীণ ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধের পরিমাণ বিদেশি ঋণ ও সুদ পরিশোধের চেয়ে অনেক বেশি। তাই সরকারকে এখন বছরে দেশি-বিদেশি ঋণের যে কিস্তি ও সুদ পরিশোধ করতে হবে, সেটাও ঋণ করেই করতে হবে। নচেৎ সম্ভব নয়। কারণ, দেশ ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছে। এ থেকে সহজে পরিত্রাণের সম্ভাবনা কম। কারণ, ঋণের টাকার প্রকল্পের বিরাট অংশ অপ্রয়োজনীয়। এছাড়া, বহু বড় প্রকল্পের রিটার্ন খুব কম। উপরন্তু বিরাট অংশ দুর্নীতি হয়েছে। তাই বর্তমান সংকটজনক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আইএমএফ’র ৪.৫ বিলিয়ন ডলার নেওয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা চলছে ঢাকায়। তাতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সংস্থাটি নানা কঠিন শর্ত দিচ্ছে। যা মেনে না নিয়ে উপায় নেই। কারণ, বৈশ্বিক মহামন্দা চলছে। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি রণিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। তাই দাতাদের ঋণ-সহায়তা কমে যেতে পারে। ইতোমধ্যেই চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে তা কমেছে ৩০%-মিডিয়া। ভবিষ্যতে আরো কমতে পারে। এছাড়া, দেশের রিজার্ভ ও রেমিটেন্স কমছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে। তাই আর্থিক ও রিজার্ভের অবস্থা সংকটের দিকে যাচ্ছে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীও স¤প্রতি বলেছেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে দেশের বর্তমান অর্থনীতি চাপে আছে’। দেশের এই সংকট অব্যাহত থাকলে উন্নতি ও এসডিজি বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। ইতোমধ্যেই এসডিজি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালে দেশের চূড়ান্তভাবে এলডিসি উত্তরণের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

দেশের উন্নতির ধারা ও এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি অব্যাহত এবং এলডিসি উত্তরণের সক্ষমতা অর্জন করতেই হবে। তাই আত্মনির্ভরতার দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে, যার অন্যতম হচ্ছে কর জিডিপির হার অন্তত ১৫% করা। সে লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের আদায়কৃত শতভাগ ভ্যাট সরকারের কাছে জমা নেওয়ার জন্য দোকান মালিক সমিতির নিবন্ধিত ৩০ লাখ সদস্যের মধ্যে যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৫ কোটি টাকার অধিক, তাদের সকলকে ইএফডির আওতায় আনতে ও অবশিষ্ট ব্যবসায়ীদের আদায়কৃত ভ্যাট শতভাগ সরকারের কোষাগারে জমার জন্য এনবিআরের লোকদের এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব দিতে হবে। একই ব্যবস্থা করতে হবে দেশব্যাপী ব্যক্তি করযোগ্য সব লোককে ই-টিআইএন নম্বরের আওতায় আনা ও সকলকে রিটার্ন দাখিলে বাধ্য করা। এছাড়া, টিন নম্বরের তালিকা সার্বক্ষণিক হালনাগাদ করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে যে ব্যর্থ হবে সে অদক্ষ ও দুর্নীতিবাজ। তাই তাদেরকে দ্রæত কঠোর শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া, যারা ভ্যাট, কাস্টমস ও ইনকাম ট্যাক্স ফাঁকি দেবে তাদেরও দ্রæত কঠোর শাস্তি এবং কর সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রæত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি অধিকাংশ দেশে ট্যারিফ কমিশন শুল্ক আরোপসহ সবকিছু করে। কিন্তু বাংলাদেশে ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে এনবিআরের যোগাযোগ নেই। গণশুনানি করে ট্যারিফ কমিশন আর শুল্কারোপ করে এনবিআর। তাই এ নিয়ে বড় সংকট রয়েছে, যা রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির চরম অন্তরায়-মিডিয়া। তাই এই সংকট দ্রæত নিরসন করতে হবে। এসব বিষয়ে তথা কর অব্যাহতি সুবিধা কমানো, রাজস্ব খাতে সংস্কার, ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন, ভ্যাট বিভাগ ও কাস্টমসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার তাগিদ দিয়েছে এবং নতুন কাস্টমস আইনের খসড়া ও আয়কর আইন কী অবস্থায় আছে তা জানতে চেয়েছে আইএমএফ। গত ৩০ অক্টোবর এনবিআরের সাথে বৈঠকে সংস্থাটি এসব বলেছে। যা’হোক, দেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে নবতর এসব করা হলেই কর আদায়ের ক্ষেত্র ও সক্ষমতা বেড়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির স্থায়ী পথ সৃষ্টি হবে এবং কর জিডিপির হার বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি হবে। তখন আর বিদেশি ঋণ সহায়তার জন্য অনুরোধ করতে হবে না।নিজস্ব অর্থেই কাক্সিক্ষত উন্নতি হবে।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
sardarsiraj1955@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন