প্রতিবন্ধী তিন কন্যা সন্তান নিয়ে চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন বিধবা মমতাজ বেগম। পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে তিন সন্তানই দৃষ্টি, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। স্বামীহারা সংসারে তিন প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে একদিকে দিশেহারা অন্যদিকে বেঁচে থাকার জীবন সংগ্রামে লড়ছেন ষাটোর্ধ্ব বয়সী অসহায় মা মমতাজ বেগম।
বলছিলাম কুমিল্লা নগরীর দ্বিতীয় মুরাদপুরের সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মমতাজ বেগমের তিন প্রতিবন্ধীর কথা। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মমতাজ বেগমের স্বামী দুদু মিয়া বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। এরপর থেকেই মমতাজ বেগম তিন প্রতিবন্ধীসহ চার সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লড়াই শুরু করেন। এভাবে আর পারছেন না। হাঁপিয়ে ওঠেছেন সংসারের খরচ মেটাতে গিয়ে। বসত ঘরটিও ভেঙে পড়ে পড়ে অবস্থা। চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন অসহায় মমতাজ বেগম। স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রশাসন ও বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন মমতাজ বেগম।
জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী মমতাজ বেগমের তিন কন্যা সন্তান। তাদের চিকিৎসা না করাতে পারলেও কবিরাজি ঝাড়-ফুকের কোন কমতি ছিল না। এরমধ্যে আজমিরী বেগম (৪৫) ও রেখা বেগম (৩৩) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আরেক মেয়ে হাসি বেগম (৩৫) শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ছোট মেয়ে নাজমা বেগম (২৮) সুস্থ থাকায় সেলাই কাজ করে কোন রকমে সংসারের ব্যয় বহন করেন। প্রতিবন্ধী তিনজনের মধ্যে আজমিরী বেগম ও রেখা আক্তারের প্রতিবন্ধী নিবন্ধিত কার্ড থাকলেও হাসি বেগমের কোন কার্ড নেই।
প্রতিবন্ধীদের মা মমতাজ বেগম জানান, একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে খুব কষ্ট করতে হয়। কিন্তু তিনটি প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
তিনি আরো জানান, দুই মেয়ের প্রতিবন্ধী ভাতা ও ছোট মেয়ের সেলাইয়ের রোজগারের টাকায় ওদের ওষুধ, সংসারের খরচ কোনভাবে মেটে না, ঠিকমতো খাবার জুটছে না। তাদের তিন বেলা খাবার দেয়া মমতাজ বেগমের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বসত ঘরের অবস্থা এতোটাই করুণ, এটাতে বসবাস করাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরের চালা দিয়ে একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ঘরে।
স্থানীয় এমপি, প্রশাসন ও বিত্তশালীরা এগিয়ে এলে তিনটা প্রতিবন্ধী মেয়ে নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারবো। আর বসত ঘরটা মেরামত করে দিলে থাকার জন্য ঠাঁই মিলবে। প্রতিবন্ধী তিন কন্যা সন্তান ও সংসার চালানোর লড়াইয়ে আর পেরে ওঠছেন না অসহায় মমতাজ বেগম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন