আসন্ন গুজরাট নির্বাচনে আদিবাসী ভোট নিয়ে চিন্তার ভাঁজ ক্ষমতাসীন বিজেপির কপালে। রাজ্যে তপসিলী উপজাতিদের জন্য ২৭টি আসন সংরক্ষিত। এছাড়াও ১৪টি জেলাতে আদিবাসী ভোট একপ্রকার নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। আদিবাসীদের হাতে প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট। অথচ রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও গুজরাটে বিজেপি কোনও আদিবাসী ‘মুখ’কে নেতা হিসেবে তুলে ধরতে পারেনি।
বস্তুত, একসময়ে আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত ২৭টি আসনে কংগ্রেসের বড় প্রভাব ছিল। যার মধ্যে ২০১৭ সালের নির্বাচনে ১৭টি গিয়েছিল কংগ্রেসের ঘরে। পরে অবশ্য তার মধ্যে থেকে পাঁচ জন বিজেপিতে যোগ দেন। কংগ্রেস এবার সেখানে দুর্বল হয়েছে। কিন্তু তাতে বিজেপির খুব একটা সুবিধা হয়নি। এই আসনগুলিতে এবার ত্রিমুখী লড়াই। কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গেই ঢুকে পড়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।
আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় নিজেদের জমি শক্ত করতে গেরুয়া শিবির বহুদিন থেকেই চেষ্টা করেছে। নর্মদা জেলার কেভাডিয়াতে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি স্থাপন করে সেখানে আদিবাসীদের উন্নয়ন সংক্রান্ত মডেল হিসেবেও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, বিজেপি তাতে আদিবাসীদের মন কতটা পেয়েছে তা নিয়ে রীতিমতো সন্দেহ রয়েছে। কারণ, মূর্তির জায়গা নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত হয়েছিল। স্ট্যাচু অফ ইউনিটিকে সামনে রেখে কর্মসংস্থানের যে স্বপ্ন সেখানকার আদিবাসী সমাজকে দেখানো হয়েছিল তার বাস্তবায়ন নিয়ে তারা মোটেই সন্তুষ্ট নয়।
বেকারত্ব, স্বাস্থ্য পরিষেবা, তাদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলি নিয়ে আদিবাসীদের দাবি রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে পঞ্চায়েত (তপসীলি এলাকার সম্প্রসারণ) আইনের বাস্তবায়নের দাবি। যা আদিবাসীদের জমির মালিকানার অধিকার দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।
আদিবাসীদের মন জয় করতে মাঠে নেমেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাট নির্বাচনের প্রচারের শুরুতেই ‘এ ফর আদিবাসী’ বলে স্লোগানও দিয়েছেন মোদি। শুধু গুজরাট নয়, মধ্যপ্রদেশ, মহরাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার মতো রাজ্যগুলির আদিবাসী ভোটের কথা মাথায় রেখেই রাষ্ট্রপতি হিসেবে সরকারপক্ষ তথা বিজেপি এবার তাদের সমাজের প্রতনিধিকে তুলে ধরেছে বলেই রাজনৈতিকমহল ব্যাখ্যা। কিন্তু তার উপরে ভর করেই আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি অনায়াসে ভোট বৈতরণী পার করে ফেলবে এমনটা প্রত্যাশা না করাই ভাল। সূত্র: টাইমস নাউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন