মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথম সমাবেশ করলেন ইমরান খান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ১০:৪৩ এএম | আপডেট : ১:৫৭ পিএম, ২৭ নভেম্বর, ২০২২

সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন।


তিন সপ্তাহ আগে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই প্রথম বিশাল জনসভায় তার সমর্থকদের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। রাওয়ালপিন্ডি শহরে আয়োজিত ওই সমাবেশে হাজারো মানুষ জাতীয় পতাকা ও দলীয় প্রতীক নিয়ে ভিড় করেন। সাবেক এই ক্রিকেট তারকা সবাইকে মৃত্যুর পরোয়া না করে বাঁচার আহ্বান জানিয়েছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে এমনই এক জনসভায় হামলার ঘটনায় একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সে সময়ে ডান পায়ে আঘাত পান এবং সেখানে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। তিনি ওয়াজিরাবাদে হামলার পেছনে বর্তমান সরকারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ আনেন। কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে এক ব্যক্তিকে বন্দুক হাতে দেখা যায়। ওই ঘটনায় তাকেই একমাত্র সন্দেহভাজন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তার থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেয়া হয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডি সমাবেশে, কয়েক ঘণ্টা বিলম্বের পরে যখন খান হাজির হন, তখন তার সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। এক নারী বিবিসিকে বলেন, ইমরান খান এ সমাবেশে নিজের জন্য নয় বরং জনগণের জন্য এসেছেন। ‘আমি এখানে এমন একজন নেতার জন্য এসেছি যিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন,’ তিনি বলেন। ভিড়ের মধ্যে থেকে আরেক ব্যক্তি বলে উঠলেন, ‘একজন লোকই আছে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে এসেছেন, তিনি আমাদের একটি লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছেন।’

ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় থাকলেও সমাবেশের পরিবেশ ছিল বেশ আনন্দঘণ। একদিকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনে জনতার স্লোগান দিচ্ছে, অন্যদিকে এবং লাউড স্পিকারে জনপ্রিয় পাকিস্তানি গান বাজছে। ইমরান খান অভিযোগ করে বলেছেন যে, ‘তিন জন অপরাধী’ আরেকবার তার জীবন নেয়ার অপেক্ষায় ছিল। তবে, তিনি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভয় পুরো জাতিকে দাসে পরিণত করে।’ তিনি তার বক্তৃতায়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতি মোকাবেলায় ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেন – তিনি বলেন যে, ‘শক্তিশালীদের আইনের আওতায় আনতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।’

এ ইভেন্টকে ইমরান খানের ‘লং মার্চ’-এর শেষ দৃশ্য হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। লং মার্চ হল তার ধারাবাহিক সমাবেশ যেখানে তিনি আগাম নির্বাচনের দাবি জানান। এর আগেই, কর্তৃপক্ষ রাস্তা অবরোধ করে এবং সহিংসতার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে জানিয়ে তাকে সমাবেশ বন্ধ করার আহ্বান জানায়।

পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় সাবেক এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকাকে। পরে তাকে সরকারি পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। রোলেক্স ঘড়ি, একটি আংটি এবং কাফ লিঙ্ক সহ - অফিসে থাকাকালীন তিনি যে উপহারগুলো পেয়েছেন এবং বিক্রি করেছেন তার বিশদ বিবরণ সঠিকভাবে দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ইমরান খান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে মামলাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন। পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর, তিনি পাকিস্তানের সরকার এবং এর শক্তিশালী সামরিক নেতৃত্বের একজন সোচ্চার সমালোচক হয়ে উঠেছেন। ইমরান খান তার দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তার সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম হয়। সূত্র: বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন