শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খাঁটি মুসলমান তৈরি করাই ছারছীনা দরবারের লক্ষ্য

মাহফিলের উদ্বোধনী বক্তব্যে ছারছীনার পীর ছাহেব

ছারছীনা থেকে মোঃ আবদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দরবার পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার অন্তর্গত ছারছীনা দরবার শরীফে আরম্ভ হয়েছে ১৩২তম বার্ষিক ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল। তিনদিন ব্যাপী মাহফিলের আজ দ্বিতীয় দিবস। গত সোমবার বাদ মাগরিব জিকির-আজকারের অন্তে পীর ছাহেব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মাদ মোহেব্বুল্লাহ্ (মা.জি.আ.)-এর উদ্বোধনী ভাষণের মধ্য দিয়ে মাহফিলের সূচনা হয়। যথারীতি সূরা ফাতিহা, সূরা ইয়াসীন, সূরা আর রহমান এবং কুরআন মাজীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তেলাওয়াতের পর মীলাদ পাঠ করা হয়। এরপর হযরত পীর সাহেব উদ্বোধনী ভাষণ প্রদান করেন।

হযরত পীর সাহেব বলেন, আজ থেকে ১৩২ বছর আগে অত্র দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর শাহ্সূফী হযরত মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমদ (রহ.) এ মাহফিলের গোড়াপত্তন করেছিলেন। তিনি ফুরফুরা শরীফের পীর মুজাদ্দেদে যামান শাহ্সূফী হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দীকী আল্ কুরাইশী (রহ.) এর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে তরীকা মশক করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রিয় মুরীদ শাহ্ নেছারকে খেলাফত প্রদানের মাধ্যমে বাংলায় গিয়ে হেদায়েত ও তাবলীগের কাজ আঞ্জাম দেয়ার নির্দেশ দেন। তখন থেকে তিনি ছারছীনা দরবার শরীফে এ বার্ষিক মাহফিল এবং হক্কানী আলেম তৈরীরর লক্ষ্যে ছারছীনা দারুস্সুন্নাত কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। অবশ্য এর পূর্ব থেকেই দাদা হুজুরের পিতা ও দাদা দক্ষিণ বঙ্গে হেদায়েতী কাজে নিয়োজিত থেকে বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

দাদা হুজুর যখন খেলাফতপ্রাপ্ত হয়ে দেশে আসেন, তখন এদেশের মুসলমানরা নাম কে ওয়াস্তে মুসলমান ছিলেন। তারা নামের পূর্বে শ্রী লিখতেন, হিন্দুদের অনুকরণে ধূতি পরতেন, পূজা-পার্বনে শরীক হতেন, মাথায় টিকি রাখতেন, দাড়ি কাটতেন, নামাজ পড়তেন না, রোযা রাখতেন না, এমনিভাবে কুসংস্কারে ভরা ছিল গোটা সমাজ ও দেশ। মুসলমানরা বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল তাদের জাতীয় পরিচয়। তখন তিনি সর্বশক্তি দিয়ে সমাজ সংস্কারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি গ্রাম বাংলার প্রতিটি গোশায় গোশায় গিয়ে মাহফিলে ওয়াজ-নসীহত করা এবং তা’লীম তালকীন প্রদানের মাধ্যমে লোকদেরকে ইসলামের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। সম্ভব মত তিনি প্রতিটি গ্রামে গ্রামে মসজিদ, খানকাহ, মাদ্রাসা, মক্তব ও ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল প্রতিষ্ঠার প্রায়াস পান। আর আওয়াজ তোলেন- মুসলমান টিকি কেটে টুপি পরো, ধুতি খুলে লুঙ্গি পরো, শ্রী মুছে মুহাম্মদ লাগাও, পূজা ছেড়ে মসজিদে যাও, বেপর্দেগী চলাফেরা বন্ধ করে পর্দা কর ইত্যাদি। তাঁর এ আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলে গেছেন, ‘আমলে, আকীদায় ও সুন্নাত তরীকার নমুনায় খাঁটী মুসলমান সৃষ্টির জন্যই অত্র দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

মাহফিলের ১ম দিন গতকাল বাদ ফজর ওজীফা ও তা’লীমের পর হতে ওয়াজ ও নসীহত চলমান ছিল। এ সময়ে ওয়াজ ও নসীহতে অংশ নেন, মাওলানা আ.জ.ম. ওবায়দুল্লাহ্, মাওলানা আবু জা’ফর মো. অহিদুল আলম, মাওলানা মো. মামুনুল হক, পীর সাহেবের ছোট ছাহেবজাদা নায়েবে আমীর হযরত মাওলানা শাহ্ আবু বকর মোহাম্মাদ ছালেহ্ নেছারুল্লাহ্, মুফতী মাওলানা মাহমুদুল মুনীর হামীম, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।
আজ মাহফিলের ২য় দিন। আগামীকাল বাদ জোহর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে হযরত পীর সাহেব তিনদিনব্যাপী মাহাফিলের আখেরী মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মাহফিলের ময়দানর পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
আবু নাছের মুহাম্মাদ তালহা ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১:১২ পিএম says : 0
আল্লাহ পাক ছারছিনা দারুসসুন্নাত দরবার শরীফ কে ইসলাম ও মুসলমানের খেদমতে কবুল করুক, আমিন ।
Total Reply(0)
মোঃ নাজমুল হক ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১০:১২ এএম says : 0
মাশা আল্লাহ অনেক অনেক দোয়া ছারছিনা দরবারের জন্য
Total Reply(0)
মোঃ নাজমুল হক ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১০:১৩ এএম says : 0
মাশা আল্লাহ অনেক অনেক দোয়া ছারছিনা দরবারের জন্য
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন