রাজশাহী শহরের মাদ্রাসা মাঠে আজ শনিবার দুপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত তিন দিন ধরে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সমাবেশস্থলে ঢুকতে দিচ্ছে না। ফলে নেতাকর্মীরা গত দুই দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন সমাবেশস্থলঘেঁষা ঈদগাহ মাঠে। সেই মাঠ এখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। সেখানে জায়গা না পেয়ে নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাতে সরেজমিন দেখা যায়, ঈদগাহ মাঠে লোকে লোকারণ্য। তাঁবুগুলোতে সবাই কম্বল মুড়িয়ে ঘুমাচ্ছেন। কেউ কেউ বসে গল্প করছেন। জায়গা না পেয়ে অনেক নেতাকর্মী পার্শ্ববর্তী রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরপর স্লোগান দিচ্ছেন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, দুপুরের সমাবেশ সফল করেই তারা বাসায় ফিরে ঘুমাবেন। তারা দেশে গণতন্ত্রের জন্য যেকোনও ধরনের ‘স্যাক্রিফাইস করতে রাজি আছেন।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থেকে আসা বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এ কষ্ট আমাদের জন্য কিছুই না। গত ১২ বছর ধরে আমাদের ভোটাধিকার নেই। দ্রব্যমূল্যের দাম যা বাড়ছে তাতে আমরা ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকাবো, সে অবস্থাও নেই। তাই আমরা এই সরকারকে আর চাই না।’
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পথে পথে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। রাজশাহীর বিভিন্ন প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে রাজশাহী রেল স্টেশনেও চলছে তল্লাশি।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, তল্লাশি করতে গিয়ে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদেরকে হয়রানি করছে পুলিশ। আবার অনেককেই রাজশাহী শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের বাড়ি ফেরত পাঠানো হচ্ছে। গত বুধবার থেকে এই অবস্থা চালানো হচ্ছে বলে দাবি বিএনপি নেতাদের।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু জানান, পুলিশি বাধা এবং হয়রানি উপেক্ষা করে এরই মধ্যে লাখো নেতাকর্মী রাজশাহী শহরে প্রবেশ করেছেন। এরই মধ্যে অনেকেই রাজশাহী ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের পাশে ঈদগাহ মাঠে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধা দিয়ে হয়রানি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাগম ঠেকানো যাবে না।
তিনি বলেন, ঈদগাহ মাঠে নেতাকর্মীদের থাকার জন্য তাঁবু টানানোর ব্যবস্থা করা হলেও পুলিশ প্রথম দিকে তাতেও বাধা দেয়। ফলে অনেক নেতাকর্মীকে রাতে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হয় বলেও জানান তিনি।
পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রফিকুল আলম আরও বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে সহিংস কিছু ঘটাতে না পারে সে জন্য সতর্ক আছি। সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া শহরে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ১৭টি পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। গোটা শহরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাদা পোশাকে মাঠে পুলিশ রয়েছে। গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাও কাজ করছেন। সমাবেশে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে এর মধ্যে মাদ্রাসা মাঠে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট থেকে এ ক্যামেরার মাধ্যমে মাঠ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন