রাজশাহীর বাজারে হরেক রকম শীতকালীন শাকস্বব্জির মাঝে গোলাপী আর সাদা রংয়ের নতুন আলু শোভা পাচ্ছে। এগুলো আগাম লাগানো। মওসুমের আলু লাগানো প্রায় শেষ। এগুলো বাজারে আসতে মাস দুয়েক লাগবে। চলতি মওসুমে আগামজাতের আলু ওঠার প্রভাব পড়েছে হিমাগারে রাখা আলুর উপর। পুরাতন আলুর ক্রেতা কম। সবার আগ্রহ নতুন আলুর দিকে। শুরুতে দাম কিছুটা বেশী থাকলেও এখন মিলছে কুড়ি পচিশ টাকা কেজিতে। স্বাদের কারনে নতুন আলুর দিকে ঝুকছেন ক্রেতা।
এদিকে বিপাকে পড়েছেন যে সমস্ত ব্যবসায়ী ও চাষীরা দাম বেশী পাবার জন্য হিমাগারে রাখা আলু ধীরে ধীরে বাজারজাত করেছেন। এখন নতুন আলুর কাছে ধরা খাচ্ছেন। এখনো কোল্ডস্টোরেজে প্রচুর আলু রয়েছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে যত দ্রুত হিমাগার খালি হয়। নতুন আলু রাখার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কিন্তু বাজারে এখন আলুর যা দাম তাতে লাভতো দূরে থাক হিমাগার থেকে আলু বের করে বাজারে নিয়ে যাবার মত খরচ উঠছেনা। খুচরো বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে দশ বারো টাকা কেজি। হিমাগারের কাছে আরো কম। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বের করছেনা। এদিকে সংরক্ষিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছে হিমাগার কর্তৃপক্ষ। এবার সবকিছুর দাম বেশ বাড়তি থাকলেও আলুর বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। বছরজুড়ে গড়ে সব্বোর্চ কেজিপ্রতি দাম ছিল পচিশ টাকা। অথচ গত মওসুমে অনেক বেশী দামে আলু কিনে স্টোরেজ করেছিলেন চাষী ব্যবসায়ী আর মওসুমী ব্যবসায়ীরা। এবার সবাই ধরা খেয়েছেন। আলুর দামে মার খাওয়ার প্রভাব পড়েছে চলতি আলু মওসুমের আবাদে। এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর। যদি গত মওসুমে আবাদ হয়েছিল সাড়ে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার তিন হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ কম হবে। কারন আলুর কাংখিত দাম না পাওয়ায় লোকসান গোনার কারনে আবাদ বিমুখ হয়েছে। চাষীরা বলছেন যে আলু বিক্রি করে আবাদ করব সে আলু এখনো গুদাম বন্দী। ফলে বাধ্য হয়ে ঋণ নিয়ে সামান্য কিছু জমিতে আবাদ করেছেন।
একজন আলু ব্যবসায়ী বলেন, গত মওসুমে এক বস্তা (৬৫) আলু কিনেছেন এগারো’শ টাকায়। আর হিমাগার খরচ চারশো টাকা। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে পনের’শ টাকা। আর এখন সেই আলু বিক্রি করছেন প্রতিবস্তা সাতশো টাকা। রহমান নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন বাজারের অবস্থা ভালনা বুঝতে পারায় সারাবছর আলু রাখার পর গত নভেম্বরে আলু বিক্রি করে ষাট হাজার টাকা লোকসান গুনেছেন। হিমাগারের লোকজন বলেন, আমরা আলু রাখা লোকজনকে ফোন করে করে তা বের করার জন্য বলা হলেও তাতে তারা গা করছেন না। আলু নিয়ে এমন গোলমেলে অবস্থায় বিপাকে রয়েছেন আলু মজুদকারী আর হিমাগার মালিকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন