কলারোয়ায় গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপি’র সিংহভাগ প্রকল্প বরাদ্ধের টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। কলারোয়া উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর টেন্ডার ও প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে কাজগুলো বাস্তবায়ন করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৩ জানুয়ারি ’২২ প্রকল্পগুলো চুড়ান্ত করে টেণ্ডার আহবান হয়। টেন্ডারের শর্তানুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে এই কাজ সম্পাদনের কথা। কিন্তু বহু প্রকল্পের কাজে হাত না দিয়ে, কোথাও টিআর কাবিখা বা এলজিএসপি’র কাজ দেখায়ে, কয়েক বছর আগে সমাপ্ত কাজ দেখায়ে ও একই প্রকল্প একাধিক নামে প্রকল্প বরাদ্ধ তুলে নেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে দেখা যায়, কাজে হাত না দিয়ে দক্ষিণ সোনাবাড়িয়া ডিপের ড্রেন নির্মাণে বরাদ্ধ ৭০ হাজার টাকা, প্রভাতী সংঘ মেরামত ও ফার্নিচার সরবরাহে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, রামকৃষ্ণপুর দূর্গা মন্দির সংস্কারে ৫০ হাজার টাকা, দঃ সোনাবাড়িয়া আলাউদ্দীনের বাড়ির সামনে সিসি ঢালাই ও সিদ্ধেশ্বরের বাড়ির সামনে ইটের সোলিংয়ে ১ লাখ টাকা এবং সোনাবাড়িয়া ওমর ইবনে খাত্তাব হাফেজি মাদরাসার নামে বরাদ্ধ ১ লাখ তুলে নেয়া হয়েছে। টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনীর বড়ালী মডেল মাদরাসায় পাকা অবকাঠামো না থাকলেও ছাদ নির্মাণে বরাদ্ধ ২ লাখ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। এদিকে কেরালকাতা ইউনিয়নে কাজ না করে কাউরিয়া মোকছেদের বাড়ি থেকে আশরাফ মেম্বরের বাড়ি পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণে বরাদ্ধ ১ লাখ টাকা এবং কোমরপুর এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা সংস্কারে বরাদ্ধ ১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। চন্দনপুর ইউনিয়নে কাজ না করে তিনবটতলা মসজিদ সংস্কর/টয়লেট নির্মাণে বরাদ্ধ ৮৩ হাজার টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। এই ইউনিয়নে গোয়ালপাড়া বটতলা থেকে সাত্তারে বাড়ি ইটের সোলিংয়ে যথাক্রমে ১ লাখ ৫০ হাজার এবং ৭০ হাজার বরাদ্ধে দুটি প্রকল্পের একটির কাজ করে অপরটি আত্মসাত করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়। কেড়াগাছি ইউনিয়নে, কাজে হাত না দিয়ে গোয়ালচাতর বাজারে ২ পানির ফিল্টার ক্রয়ে বরাদ্ধ ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। একই ইউনিয়নে বালিয়াডাঙ্গা বাজারে সোবহানের দোকান হতে রানা মেম্বরের দোকান পর্যন্ত সদ্য কার্পেটিং করা হয়েছে। এই রাস্তায় খোয়া ও বালি দ্বারা সংস্কারে বরাদ্ধ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। এদিকে লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নে তিন বছর আগে কার্পেটিং’র সময় খাসপুর সুফলের দোকানের পাশে বক্স কালভার্ট নির্মাণ হয়। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে অক্ষত এই কালভার্ট নির্মাণে পুনরায় ৭০ হাজার টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। একই ইউনিয়নে কাজ না করে লোহাকুড়া ঘেষের পুকুর হতে মিয়ারাজ সরদারের বাড়ি রাস্তায় এডিপি’র ৬৫ হাজার টাকা ও ভিন্ন নামে মাটি ভরাট ও সোলিংয়ে কাবিটা প্রকল্পে ২ লাখ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। একই রাস্তা অপর নামে এলজিএসপি প্রকল্পে ৫০ হাজার টাকায় ইটের সোলিং করা হয়েছে। গৃহহীনের মধ্যে বরাদ্ধ দেওয়ার আগেই ভাদিয়ালীতে সদ্য নির্মিত মুজিববর্ষের ঘর পুর্ণ:নির্মাণ/সংস্কারে দুই প্রকল্পে বরাদ্ধ ৪ লাখ টাকার কোন কাজ না হওয়ার ঘটনা একটি শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে জানা গেছে। এভাবে নানা কৌশলে সিংহভাগ প্রকল্প বরাদ্ধ লোপাট হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কলারোয়া উপজেলা প্রকৌশলী সুদীপ্ত কুমার বহু কাজ না হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নতুন ইট বের হলে কাজে হাত দেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন