কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে পুলিশ সদস্যসহ চার জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার নোয়াখালী লাকসাম রেলপথের নাঙ্গলকোট উপজেলার অংশে আদ্রা দক্ষিণ ইউপির তুগুরিয়া নামক স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মনোহরগঞ্জের উত্তর হাওলা গ্রামের মৃত. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সাবেক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য মাকসুদুর রহমান (৬৫), একই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে অটোরিকশা চালক শহিদুল ইসলাম (৪০) ও আবু তাহেরের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২) এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা উত্তর ইউপির শাকতলী গ্রামের আফজালুর রহমানের স্ত্রী মহিফুল বেগম (৫০)।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুগুরিয়া নামক স্থানে আসলে মনোহরগঞ্জ উত্তর হওলা গ্রাম থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি হঠাৎ তুগুরিয়া রেল ক্রসিংয়ের উপর উঠে ট্রেনের সামনে চলে আসে। এতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে গিয়ে একটি জমিনে পড়ে। এতে সিএনজিতে থাকা তিন যাত্রী ও চালকের ঘটনা স্থলে মৃত্যু হয়।
তুগুরিয়া রেল ক্রসিংয়ে গেইটম্যানের থাকার ঘর থাকলেও নেই কোন গেইটম্যান। ফলে আজকের ঘটনা সহ বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে এ স্থানে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় মোহাম্মদ মহি উদ্দিন বলেন, সকাল বেলা ট্রেনটি রেল ক্রসিংয়ের উপর আসলে হঠাৎ সিএনজিটি রেললাইনের উপর উঠে পড়ে। এতে ট্রেনটি সিএনজিটিকে ধাক্কায় দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে ফেলে দেয়। পরে দুর্ঘটনার পর পর দৌড়ে এসে দেখি মহিলাটির লাশ ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়ে আছে রাস্তার পাশে। আরেকটু সামনে গিয়ে দেখি আর তিনজনের খন্ড বিখন্ড লাশ। খবর পয়ে নিহতদের আত্মীয়স্বজনরা এসে লাশ নিয়ে কেউ হাসপাতালে আবার কেউ বাড়িতে চলে যায়।
নিহত মাকসুদুর রহমান ভায়েরার ছেলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাকসুদুর রহমান স¤প্রতি ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগের ভুগছেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে ঔষধদের জন্য লাকসাম যাওয়ার পথে তুগুরিয়া রেল ক্রসিংয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এখানে গেইট থাকলেও নেই কোন গেইটম্যান।
নিহত হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, স¤প্রতি প্যাথলজি উপর ডিপ্লোমা শেষ করে নাথেরপেটুয়া একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করেন। প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিন সকালে কর্মস্থলের উদেশ্যে সিএনজি যোগে তুগুরিয়া রেল গেইটের উপর ট্রেন দুর্ঘটনা তার মৃত্যুর খবর শুনি। পরে আমরা গিয়ে তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসি।
নিহত মহিফুল বেগমের ছেলে আজিমুল্যাহ হানিফ বলেন, তার মা মনোহরগঞ্জ উপজেলার বড় নিকন্ড গ্রামে তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। নানার বাড়িতে তাদের বাড়িতে আসার সময়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় তার মায়ের মৃত্যু হয়।
এ বিষয় লাকসাম জিআরপি থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সৌতাল করি। সিএনজি চালক খেয়াল না করায় ট্রেনের ধাক্কায় চালক সহ চার জনের মৃত্যু হয়। আইনি পক্রিয়া মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন