পটিয়া পৌরসভার অধিকাংশ পুকুর ইদানিং ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বিগত ১০ বছরে ৯ ওয়ার্ডের প্রায় ৫০/৫৫টি পুকুর ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন আগে ভরাট হয়ে গেছে মুন্সেফ বাজার জামে মসজিদ পুকুর। এলাকার লোকজনের নামাজ পড়ার সুবিধার্থে ১৮৮৪ সালে মুন্সেফ বাজারের পাশে পুকুর পাড়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শুকুর আলী মুন্সেফ জামে মসজিদ। মসজিদের মুসল্লিগণ শত বছর ধরে মসজিদের সামনে পুকুরটিতে ওযু করে নামাজ আদায় করে আসছিল। এছাড়া মসজিদের ঈমাম মোয়াজ্জিনসহ বিভিন্ন লোকজন এ পুকুরে গোসল করত। পুকুরটি এস. আলম পরিবারের হওয়ায় তাদের প্রয়োজনে গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পুকুরটি ভরাট করে ফেলে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আল্লাই ও ওখারা গ্রামে ৩টি পুকুর, ২নং ওয়ার্ডের সুচক্রদন্ডী গ্রামে ৫টি পুকুর, ৩নং ওয়ার্ডের তালতলাচৌকি আবদুর রহমান স্কুলের সামনে, কাউন্সিলর বুলবুল আক্তারের পেছনে, শশাংক মালা স্কুলের পাশে ২টি, সুলতান মেম্বারের পাশে ১টি, রাজিব সেন ও রাজুর বাপের বাড়ী ২টি, ধোপাপুকুর পাড়ে ২টি, বৌদ্ধবিহারে ৩টিসহ ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে ১৫টি পুকুর ভরাট হয়ে যায়। ৪নং ওয়ার্ডের ছন্দা সিনেমার দক্ষিণে বড়ুয়া পুকুর, মাঝের ঘাটা ও এস. আলম বাড়ি এলাকায় ৩টি পুকুর ও সাব রেজিস্ট্রার অফিসের পাশে ১টি পুকুরসহ এ ওয়ার্ডে ৬টি পুকুর ভরাট হয়। ৫নং ওয়ার্ডে শফি তালুকদার বাড়ির পুকুর, বারৈইপাড়া পুকুর, সবজারপাড়া মসজিদের সামনে একটি পুকুরসহ এ ওয়ার্ডে ৪টি পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। ৬নং ওয়ার্ডে ৩টি পুকুর ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে যায়। ৭নং ওয়ার্ডে ৬টি, ৮নং ওয়ার্ডে ৪টি ও ৯নং ওয়ার্ডে ১২টি পুকুর ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুকুর ভরাট করে সেখানে আবাসিক ভবন নির্মাণ, বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ, ঈদগাহ মাঠ নির্মাণ করা হয়। ভূমি অফিস থেকে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করে ভরাট ভূমি দেখিয়ে খতিয়ান সৃষ্টির পর পৌরসভার অনুমোদন নিয়ে মার্কেট নির্মাণ ও আবাসিক ভবন তৈরি করা হয়। পটিয়া পৌরসভার পুকুর ভরাটের হিড়িকপড়ার কারণে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে দৈনন্দিন পানি সঙ্কটের শঙ্কা বাড়ছে। রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নীরবতার কারণে পুকুর ভরাট বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অনেকের ধারণা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুর ও জলাশয় ভরাট আইনত নিষিদ্ধ হলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভরাট করে ফেলছে পুকুর। এ প্রসঙ্গে পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমার দায়িত্বকালে বর্তমানে শ্রেণী পরিবর্তন করে কোনো খতিয়ান সৃজন হয়নি। শ্রেণি পরিবর্তন সাধাণত জেলা প্রশাসকের অনুমতি ক্রমে হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে পটিয়া মেয়র আইয়ুব বাবুল জানান, পুকুর ভরাটের ব্যাপারে কেউ তথ্য দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভূমি অফিসের খতিয়ান দেখে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন