ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গাছে গাছে পেরেক ও তারকাঁটা ঢুকিয়ে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুনসহ নানা ধরনের প্রচারনা। মহাসড়কের পাশে বেড়ে উঠা গাছগুলো মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু হলেও অসচেতনতায় চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। এভাবে গাছে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে প্রচারণা দিন দিন বেড়েই চলছে। গাছে গাছে এসব ব্যানার ফেস্টুন সাঁটানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে রেইনট্রি ও নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ব্যানার, ফেস্টুনে প্রায় ঢেকে ফেলা হয়েছে উপজেলা পরিষদ। শুধুমাত্র উপজেলা পরিষদ এলাকাতেই নয়, উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বাজারগুলোতেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার দোকানগুলোতে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও ব্যবসায়ীক সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়েছে। কোন অনুমতি না নিয়ে গাছে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে ব্যানার ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। যদিও উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ব্যানার সাঁটানো এসবের বিরুদ্ধে প্রায় সময়ে ব্যবস্থা নিলেও পরবর্তীতে আবার রাতের আঁধারে টানিয়ে ফেলে।
পরিবেশবিদদের মতে, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া-অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় দ্রæত পচন ধরে। গাছের খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে গাছ মারাও যেতে পারে।
ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বৃক্ষের কষ্টটা আমরা কেউ উপলব্ধি করি না। প্রতিনিয়ত বৃক্ষ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে আমরা বাধাগ্রস্ত করছি। বৃক্ষ যে অক্সিজেন দিয়ে মানবজাতিকে বাঁচিয়ে রাখে এবং বৃক্ষেরও যে প্রাণ আছে, তা মানুষ ভুলেই গেছে। যথাসময়ে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ না নেয়ায় গাছের ওপর মানুষের এই অত্যাচার থামছে না। অধিকাংশ গাছে পেরেক বা তারকাঁটা ঢুকিয়ে বিজ্ঞাপন লাগানোয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেয়া দরকার। গাছপালায় পেরেক লাগিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করা উচিত নয়।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, পৌরসভাসহ উপজেলার ভেতরে কোন গাছ বা স্থাপনায় ব্যানার-বিলবোর্ড লাগানোর কোন নিয়ম নেই। গাছের মাঝে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে রাখা কিংবা ছড়িয়ে রাখা পরিবেশ দূষণের জন্য ক্ষতিকর। এতে পরিবেশের সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়। তিনি আরও জানান, এসব বিজ্ঞাপন, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণের জন্য আগেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এখন জোরালো উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তাই তিনি সকলকে এ বিষয়ে সচেতন থাকার আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন