জয়পুরহাট উত্তরবঙ্গের একটি ছোট জেলা হলেও জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে প্রতিদিন চলাচল করে অসংখ্য ভটভটি, নসিমন, করিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, যাদের চলাচলের কোন রোড পারমিট নেই। ভটভটি ও নসিমনের নির্দিষ্ট সংখ্যা অফিসিয়ালি না থাকলেও স্থানীয় ভটভটি মালিক সূত্রে জানা যায় জেলায় ৭ হাজারেরও বেশি ভটভটি রয়েছে যাদের নেই কোন দক্ষ চালক ও লাইসেন্স।
এই যানবাহনগুলো শহরের ভেতরে যত্রতত্র পার্কিং করায় প্রতিনিয়ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি করে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে শহরবাসী জনজীবন।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের দিনগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত মালামাল গরুসহ বিভিন্ন দ্রব্য বোঝাই করে এই তিন চাকার গাড়িগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটে। এইসব গাড়ির চালকেরা বিবেকহীনভাবে শহরের আনাছে কানাচে সড়কের ওপর গাড়িগুলো রেখে দেয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। বিকল্প তেমন কোনো রাস্তা না থাকায় শহরবাসী বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের চলাচলের অত্যন্ত বাধা সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত যানজট হয় এতে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয় এবং সময়মতো পৌঁছাতে পারে না তাদের কর্মস্থলে।
জয়পুরহাট শহরে প্রতি শনিবার নতুনহাটে এক বিশাল গরুহাট বসে। এছাড়া বুধবারও এখানে বিভিন্ন দ্রব্য ও কাঁচামালের হাট বসে এবং পাঁচবিবিতে প্রতি মঙ্গলবার একটি বড় গরুহাট বসে।
বিশেষ করে এই তিনদিন শহরের মূল রাস্তাগুলোতে ভটভটি, নসিমন করিমন ও অটোরিকশা বিভিন্ন পাশে রেখে দেওয়াই অতিমাত্রায় যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে সাধারণ লোকজনের চলাচলের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। প্রফেসরপাড়ার স্থানীয় এক গৃহিণী মোছা. আইরিন সুলতানা সোমা বলেন, হাটের দিনগুলোতে আমরা হেটে ও চলাচল করতে পারি না। কারণ যেখানে সেখানে অটো, ভটভটি ও নসিমন রাখায় রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। চলাচল করব কিভাবে?
শহরের বাটার মোড় থেকে বৈরাগীর মোড়, জামালগঞ্জ রোডে নতুনহাট পর্যন্ত এছাড়া দেওয়ানপাড়া, প্রফেসরপাড়া, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ রোড, জয়পুরহাট থেকে পাঁচবিবি রোড, জয়পুরহাট থেকে বগুড়া রোড, উল্লিখিত রোডগুলোতে অবৈধ যানবাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড অনেক বেশি।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার নূরে আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে এই গাড়িগুলো একেবারে বন্ধ না করে যত্রতত্র পার্কিং যাতে না করতে পারে ইতোমধ্যেই এর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া হাটের দিনগুলোতে শহরের মূল চারটি প্রবেশ রাস্তায় এই তিন চাকার গাড়িগুলোকে আটকানো হয়। যাতে শহরের মধ্যে যানজট সৃষ্টি না হয়।
অন্যদিকে জয়পুরহাট জেলার পিকআপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন সাহা বলেন, এগুলো তো যানজট সৃষ্টি করেই তবে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কথা চিন্তা করে এগুলো একদম বন্ধ না করে, নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। বিশেষ করে যাত্রীবাহী বড় গাড়িগুলো যেন যত্রতত্র দাড়াতে না পারে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন