শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে সরিষা ফুলে

শাহেদ রহমান, যশোর থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

যশোরের চৌগাছায় সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। শিশির ভেজা সরিষার হলুদ ফুলের ডগাই কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে। চৌগাছা উপজেলা দক্ষিণাঞ্চলের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এখানকার উৎপাদিত সবজি, চাল-ডাল সরিষার সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু লাগাতার ধান-পাটসহ উৎপাদিত কৃষিপণ্যের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ঝুকছেন লাভজনক ফসল সরিষা চাষে। গেল মৌসুমে স্থানীয় বাজারগুলোতে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল শোভা পাচ্ছে। মৌমাছিরা সরিষা ক্ষেতে ভিড় করছে মধু সংগ্রহ করতে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বা¤পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানায়, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ১৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দিগুণ। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। আগাম জাতের সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে উপজেলার এক হাজার দুইশ’ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সরিষা চাষি লাবলু হোসেন বলেন, কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৬-৮ মণ হারে সরিষা পাওয়া যাবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ সরিষা চার হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর হয়ে উঠেছে মাঠ।
উপজেলার গরীবপুরের গ্রামের সরিষাচাষি দেবু বলেন, সরিষা চাষের ফলে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের খরচ যোগান দিতে পারবেন। এবার সরিষার ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। সিংহঝুলী ও সলুয়া গ্রামের কৃষকরা জানান, সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে তাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের সংসারে তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।
উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী আমিরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে । পজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে প্রায় এক হাজার দুইশ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণে সরিষা চাষের উপকারিতা কৃষকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তেলের দাম বেড়ে গেছে। এ জন্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে এবার বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ করেছেন।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন