টাঙ্গাইলের সখিপুরে ছিলিমপুর মৌজার ১৯৬ নং দাগে হায়েত আলী পিতা হাতেম আলীর সাড়ে তিন একর জমিতে জোরপূর্বক মাটি কেটে পুকুর তৈরি করা হচ্ছে। এই মাটি আবার ইট ভাটায় বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টায় ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে জানানোর পরেও অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হায়েত আলীর সাড়ে তিন একর জমিটি গত ১০ নভেম্বর ২০২২ সখিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ভূমি অফিসার ও সার্ভেয়র জমির মাটি কাটার মৌখিক অনুমতি দিয়ে আসেন। ফসলি আবাদি জমির মাটি খননের কাজটি করছেন কালিয়ান গ্রামের সোলায়মান, সজীব ও বাবুল নামের অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। গত চার মাস আগেও খাস জমির মাটি কাটার দায়ে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এদেরকেই এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। আরো জানা যায়, বহেড়াতৈল ইট ভাটার মালিক আ. রহিমের দুটি ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা ভেকু দিয়ে লালচে উচু চালাসহ আবাদি জমি কাটা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা জানান, এ মাটি চলে যাচ্ছে বহেড়াতৈল ও তেজপুর ইটভাটায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি অফিসারকে ম্যানেজ করেই তারা মাটি বিক্রি করছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। কেউ বাধা দিতে গেলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হবে বলেও হুমকি, ধামকি দিচ্ছে ওই মাটি ব্যবসায়ীরা।
জেলা মৎস্য অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এভাবে পুকুর খননের কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে সখিপুরে অনেক পুকুর সংস্কারের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছেন। প্রকল্পের মাধ্যমে জেলা মৎস্য ও উপজেলা মৎস্য অফিসার ও প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে পুকুর খনন কাজ করা হয়। পুকুরের মাটি দিয়েই পুকুরের পার বাধতে হয় এবং শিডিউল অনুযায়ী খনন করতে হয়। তবে খাস পুকুরের মাটি বিক্রির সুযোগ নেই।
দাড়িয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ বলেন, খাস পুকুর খনন করা হচ্ছে আগে তিনি জানতেন না, কিন্তু ঐ পুকুরের সুফল ভোগীর কাঁচা ধান কেটে মাটি কাটার গাড়ি নিয়েছেন। এখবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং তখন জানতে পারেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি অফিসার মাটি ব্যবসায়ীদের মাটি কাটার অনুমতি দিয়েছেন।
সখিপুর উপজেলার খাস পুকুর ইজারদার, সুফল ভুগী ও মৎস্য চাষিরা দাবি করেন সংস্কারযোগ্য পুকুরগুলো মৎস্য অধিদপ্তরের প্রকল্পের মাধ্যমে খনন করা হোক এবং খাস পুকুরের মাটি বিক্রি বন্ধ হোক। উপজেলার সিলিমপুর মৌজার ১৯৬নং দাগের জমিটি ওই এলাকার হায়েত আলী পিতা হাতেম আলী গ্রাম সিলিমপুর। তারা একশত বছর ধরে ভোগদখল করে আসছে। এমনকি টাঙ্গাইল আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফারজানা আলম বলেন, ওই জমিটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় মাটি কাটা হচ্ছে। এই জমির আর কোন দাবিদার নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন