কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম (৩৫)কে হত্যার পর মানিককান্দি গ্রামে বাদী পক্ষের লোকজন বিবাদীদের বাড়ি ঘরে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে জানা যায়, ঘটনার দিন জহির হত্যার প্রধান বিবাদী সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের ১০ রুমের বিল্ডিং ও ১টি টিনের ঘরে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে দেয়। ঘটনার ২য় দিন ৯নং বিবাদী আব্দুল লতিফ ভূঁইয়ার টিনের ঘরে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে দেয় ও ৩য় দিন মোহন ভূঁইয়ার ৪ ছেলে মনির হোসেন, বিল্লাল, শাহাজাহান ও আবদুল বাতেনের ঘরে ও বিল্ডিংয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন বিবাদীরা।
নিহত জহিরের বাবা আবুল হোসেন মোল্লা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা লুটপাট বা অগ্নিসংযোগ করি নাই, তারা নিজেরাই মালামাল সরিয়েছে এবং নিজ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে জহিরকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং ঘটনার আগের দিন রাতে দুলারামপুর গ্রামের মোখলেছ মেম্বারের বাড়িতে মিটিং করছে বাবুল চেয়ারম্যান, সাইফুল ইসলাম, ফারুক ও মোয়াজ্জেমসহ ২০/৩০জন, তারা মিটিংয়ে পরিকল্পনা করেই আমার সন্তান জহিরকে হত্যা করেছে এই কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অপরদিকে মামলার ১নং বিবাদী সাইফুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আবু মোল্লা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে আবু মোল্লাসহ তাহার ছেলেরা আমাদের পরিবারের ওপর প্রায় ১০ বছর ধরে অন্যায় অত্যাচার জুলুম জায়গা দখল করে আসছে। ২০১৩ সালে আমার ছোট ছেলে সোহরাবকে মেরে দু’টি পা ভেঙে দিয়েছিলো, হাসপাতালে নিতে দেয় নাই তারা, অ্যাম্বুলেন্সও আটকিয়ে রাখছিল। তারপর আমাদের বাড়িতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে, আমাদের মারধর করেছে। তাদের ভয়ে আমরা প্রায় ১০ বছর বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় ছিলাম। এখন ১ বছর হলো বাড়িতে আসছি, আবার আমাদের উপর হামালা, মামলা শুরু করছে। গত ৬ ডিসেম্বর আমাদের পুকুরে আমরা মাছ ধরতে গেলে জহির তার দলবল নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়, কয়েক জনকে আহতও করে, পরে জহির তার বাহিনী নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আসে, আমার ছেলে সোহরাবকে ধরে নেওয়ার জন্য তখন মারামারি হয়। তারপর আমরা তাদের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে আসি, এই সুযোগে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ে আলমারিতে থাকা ৫ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণ, ৯টি খাট, কাঠ ও স্টিলের আলমারি, শোকেস, ফ্রিজ, টিভি, সোফা লুটপাট করে বিল্ডিংয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়, আমাদের প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে আবু মোল্লার লোকজন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মানিককান্দি গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনার পরবর্তীতে কোনো বাড়িতে অগ্নিসংযোগ বা লুটপাটের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে মোকারম নামে একজনের কয়েকটি গরু তার নিজ বাড়িতে ছিল, আমরা গরুগুলো উদ্ধার করে তার পরিবারের লোকজনের হেফাজতে বুঝিয়ে দিয়েছি।
উল্লেখ, গত ৬ ডিসেম্বর বিকেলে জমির মালিকানা নিয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষ কুপিয়ে হত্যা করে যুবলীগ নেতা জহিরকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন