মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : মীরসরাই উপজেলায় গত কয়েকদিনে কয়েকটি ভয়াবহ কয়েকটি অগ্নিকান্ডের প্রায় অর্ধশত দোকানপাট ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হয়। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রায় সকল অগ্নিকা-ই ঘটছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই। পল্লী বিদ্যুতের কিছু অনভিজ্ঞ ও হাতুড়ে ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে অধিকাংশ ঘরবাড়ি ওয়ারিং করানো ও পুরোনো মেয়াদোত্তীর্ণ ইলেকট্রিক কানেকশানে শর্ট সার্কিটগুলো থেকেই ঘটছে এইসব অগ্নিকা-। অথচ সরকারি কোন বিভাগ ও স্থানীয় সরকার কেউ এগিয়ে আসছে না জনগণের জানমাল রক্ষার এই মানবিক উদ্যোগে। অভিযোগে জানা যায়, মীরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় পল্লী বিদ্যুতের অনভিজ্ঞ ও অপেশাদার ইলেকট্রিশিয়ানদের হাতেই যেন জিম্মি পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা প্রকৌশলী ও কর্মচারী। এর নেপথ্যে ও নানা রহস্যজনক কারণ রয়েছে বলে জানা যায়। আর প্রায় সকল অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ানই নিজেরা সংযোগ, ওয়ারিং ও রিপেয়ার না করে নতুন কাজ শেখার শিশু-কিশোরদের দিয়ে যেনতেনভাবে সবখানেই ওয়ারিং করাচ্ছে। আর শুষ্ক এই মৌসুম এলেই প্রতি বছর অগণিত অগ্নিকা-ে ছাই হচ্ছে বাড়ি-ঘর, দোকান পাট । কিন্তু এগিয়ে আসছে না কেউ। এই বিষয়ে মীরসরাই ফায়ার সর্ভিসের কর্মকর্তা বিমল বড়–য়ায় কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন পুরোনো ওয়ারিংগুলো পল্লী বিদ্যুৎ নিজ দায়িত্বে চেক করা উচিত। তাছাড়া সকলেরই নিজ নিজ ঘরের ওয়ারিং নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, রান্না ঘরসহ সব কিছু রাতে চেক করে ঘুমোনো উচিত। উপজেলার নিজামপুর রেল স্টেশান এলাকায় গত সোমবার দুপুর আনুমনিক সাড়ে ১২টার সময় অগ্নিকা-ে ৭টি প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার খোকন চন্দ্র নাথ জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকা-ে আরো পুড়ে যায় নুরুল আলমের চায়ের দোকান, মোহাম্মদ ফারুকের ফার্নিচারের দোকান, কামাল হোসেনের মুদি দোকান, ফারুক হোসেনের স্টেশনারির দোকান, রিপনের ফার্নিচারের দোকান, লাল মোহনের লন্ড্রি দোকান ও খাজার সেুলন দোকান। ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি। গত রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার চিনকি আস্তানা এলাকায় মার্কেটে অগ্নিকা-ে ৬টি দোকান ও গুদাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এনামুল হক জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে জানু আক্তারের তেলের দোকানের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে জানু আক্তারের জ্বালানি তেলের দোকান, এনামুল হকের চায়ের দোকান, আলমগীরের কুলিং কর্ণার ও ৩ গুদাম। আগুন নিভাতে গিয়ে আহত হয় মো. ইউছুপ নামে একজন। পরে মীরসরাই থেকে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এছাড়া আরো কয়েকটি অগ্নিকা-ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এখনই পল্লী বিদ্যুৎ, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে শুষ্ক মৌসুমে আরো ব্যাপকতর অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন